বুধবার, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫
বুধবার, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫

রাজশাহীতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়েকে হত্যা করেন বাবা

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

 

দেড় যুগ পর রাজশাহীর বাঘা উপজেলার কিশোরী রেবেকা খাতুন (১৩) হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে রেবেকার বাবা আকসেদ আলী সিকদার নিজের মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছিলেন। তারপর প্রতিপক্ষের ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন।

দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে আদালতে মামলার বিচারও চলছিল। কিন্তু বিচার চলাকালে আদালতের মনে হয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে তারা প্রকৃতপক্ষে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। পুনরায় তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করা প্রয়োজন। তাই আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি পুনঃতদন্ত করতে দিয়েছিলেন। পিবিআইয়ের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, অন্য কেউ নয়; প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে রেবেকা খাতুনকে হত্যা করেছিলেন তার বাবা আকসেদ আলী সিকদার নিজেই।

দীর্ঘ ১৮ বছর পর এ মামলার রহস্য উদঘাটন বিষয়ে মঙ্গলবার ( ১১ এপ্রিল) পিবিআইয়ের রাজশাহী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে সাংবাদিকদের এই মামলার বিস্তারিত জানান পিবিআই রাজশাহীর প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আযাদ। তিনি জানান, আকসেদ আলীর দুই স্ত্রীর মধ্যে আফিয়ার মেয়ে ছিল রেবেকা। ২০০৪ সালের জুন মাসে নিজ বাড়িতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ১৩ বছরের এই কিশোরীকে। এরপর আকসেদ আলী থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ঘটনার দিন রাত ১১টার দিকে দুই স্ত্রী এবং মেয়েকে নিয়ে বসেছিলেন আকসেদ। বাড়ির দিকে হঠাৎ ৫০-৬০ জনকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আসতে দেখে দুই স্ত্রী তাকে পালিয়ে যেতে বলেন। আকসেদ আলী পালিয়ে গেলে প্রতিপক্ষরা তার ১৩ বছরের কিশোরীকে কুপিয়ে হত্যা করে চলে যায়।

এই মামলায় প্রতিপক্ষ মোল্লা বংশের ২০ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ এবং পরে ডিবি পুলিশ তদন্ত করে। ডিবি পুলিশ ২০০৪ সালেরই ৩০ নভেম্বর ২০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর রাজশাহীর জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন আদালতে মামলার বিচার শুরু হয়। দীর্ঘ দিন বিচার চলার পর আদালতের মনে হয় মামলার আসামিরা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। এ মামলার পুনঃতদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

এরপর গত বছরের মে মাসে আদালত মামলাটি পুনঃতদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন। রাজশাহী পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন।

প্রকাশ্যে ও গোপনে তদন্তে পিবিআই জানতে পারে, প্রতিপক্ষরা নয়, আকসেদ আলীই নিজের মেয়েকে হত্যা করেছিলেন। এরপর তার দুই স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা সবকিছুই স্বীকার করেন। তারা আদালতে বলেছেন, স্বামীর ভয়ে তারা এ নিয়ে মুখ খুলতে পারেননি।

পুলিশ কর্মকর্তা আবুল কালাম আযাদ বলেন, আদালতে এ মামলার পুরনো ডকেট পাওয়া যায়নি। পিবিআই নিজেদের মতো করেই তদন্ত করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে আকসেদ ছাড়া অন্য কেউ জড়িত ছিলেন সে রকম কোনো তথ্য পায়নি পিবিআই। আকসেদ আলী ২০১৯ সালে মারা যাওয়ায় মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা যাবে না। একটি তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। তারপর আদালত এই মামলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।

আল/দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More