শুক্রবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৫
শুক্রবার, অক্টোবর ৩১, ২০২৫

রাঙামাটি রাজবন বিহারে সম্পন্ন হলো কঠিন চীবর দান উৎসব

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

রাঙামাটি জেলার রাজবন বিহারে চীবর উৎসর্গের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে ৪৯তম কঠিন চীবর দানোৎসব।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে রাঙামাটি রাজবন বিহার প্রাঙ্গণে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ এই ধর্মীয় উৎসবে লক্ষাধিক পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটে।

প্রয়াত ধর্ম গুরু বনভান্তের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, বিশাখা প্রবর্তিত নিয়মে, ২৪ ঘণ্টায় প্রস্তুতকৃত চীবর দান করা হয়। রাজবন বিহার ভিক্ষু সংঘের প্রধান শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবিরের হাতে এসব চীবর উৎসর্গ করেন রাঙামাটি সাবেক সাংসদ ঊষাতন তালুকদার।

চীবর উৎসর্গের সময়, ভক্তদের সাধুসাধু ধ্বনিতে রাজবন বিহার এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে।

এর আগে, রাজবন বিহার প্রাঙ্গণে আসা পূণ্যার্থীদের সামনে, মহা পরিনির্বাণ প্রাপ্ত শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের অমৃত কথার অডিও উপস্থাপন করা হয়।

বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় গেরুয়া কাপড় হয় চীবর। প্রাচীন নিয়ম মতে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে চরকায় সূতা কেটে, সুতা রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় তাঁতে কাপড় বুনে চীবর তৈরি করে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করা হয় বলে এর নাম কঠিন চীবর দান।

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে বেইন ঘর উদ্বোধন ও চরকায় সুতা কাটার মধ্য দিয়ে রাজবন বিহারে শুরু হয় ২ দিনব্যাপী ৪৯তম কঠিন চীবর দানোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।

রাতভর তুলা থেকে চরকায় সুতা কেটে, সুতা রং করে আগুনে শুকিয়ে সেই সুতায় শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে চলে চীবর বুননের কাজ। দুপুরে ভিক্ষু সংঘকে সেই চীবর (বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র) দান করার মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় তীর্থস্থান রাজবন বিহারে চীবর দানোৎসব সম্পন্ন হয়।

রাজবন বিহার উপাসকউপাসিকা পরিষদ সাধারণ সম্পাদক অমিয় খীসা বলেন, বৌদ্ধদের যত ধরনের দান রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে পূণ্যেরদান হলো কঠিন চীবর দান। এ জন্য কঠিন চীবর দানোৎসবকে দানোত্তম চীবর দান উৎসব বলা হয়ে থাকে।

তিনি আরও বলেন, এ বছর রাজবন বিহারে প্রায় ২০০ বেইন ও দেড় শতাধিক চরকার সাহায্যে ৬ শতাধিক দায়কদায়িকা চীবর বুননের কাজে অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া এ বছর ভারতের মহারাষ্ট্র থেকে ৭৬ জনসহ আমেরিকা, থাইল্যান্ড ও শ্রীলংকা থেকে বহুপূণ্যার্থী রাঙামাটি রাজবন বিহারের ৪৯তম দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেছেন।

প্রসঙ্গত, গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় মহা উপাসিকা বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা এবং সুতা রঙ করে কাপড় বুনে তা সেলাই করে চীবর (ভিক্ষুদেরপরিধেয়বস্ত্র) দান করে এই কঠিন চীবর দানের সূচনা করেন প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে। এই পদ্ধতিতে দান করলে অধিকতর পুণ্যলাভ হয় বলে বৌদ্ধ শাস্ত্রে উল্লেখ আছে।

 

মিশু দে/এসএ

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More