মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৫, ২০২৫
মঙ্গলবার, এপ্রিল ১৫, ২০২৫

রমনা বটমূলে গানে গানে বর্ষবরণ, গাজায় নিহতদের স্মরণ

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

সকালের সূর্য উঠার পর পরই রমনা বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন। গানে গানে বাংলা ১৪৩২ সনকে বরণ করে নেয়া হয়।

ভোর সোয়া ছয়টার দিকে শিল্পী সুপ্রিয়া দাশের কণ্ঠে ভৈরবী রাগালাপের মাধ্যমে পহেলা বৈশাখের এ অনুষ্ঠান শুরু হয়।

অনুষ্ঠান শুরুর আগেই অনেক মানুষ সেখানে এসে ভিড় করে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে অনুষ্ঠানস্থলে ভিড় বাড়তে থাকে। এবারের পহেলা বৈশাখ উদযাপনের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। এই প্রতিপাদ্যের মাধ্যমে ছায়ানট একটি বার্তা দিতে চায়—আশা, সহনশীলতা আর পুনর্জাগরণের।

অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের। তাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আগত দর্শনার্থীদের মধ্যে আনন্দ আর উচ্ছ্বাস। নারীদের বেশিরভাগেরই পরনে শাড়ী। পুরুষদের পরনে বাহারি পাঞ্জাবি। পোশাক রঙবেরঙের হলেও লাল সাদার আধিক্য ছিল চোখে পড়ার মতো।

গান আর আবৃত্তিতে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলা নববর্ষকে। সব দর্শনার্থী মন্ত্রমুগ্ধের মতো এ আয়োজন উপভোগ করেন। বর্ষবরণের এমন সুরের মূর্ছনায় অজান্তেই ঠোঁট মিলিয়েছেন তারা। অনেকে দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান দেখেছেন। একেকটি পরিবেশনা শেষ হতেই চলছিল তুমুল করতালি। নতুন বছর যেন ভালো কাটে এমনটি প্রত্যাশা তাদের।

অনুষ্ঠানস্থলে কথা হয় প্রবাসী ফাতেমা খানের সাথে। তিনি বলেন, আমি লন্ডনে থাকি। দীর্ঘদিন পর দেশে এসেছি। দেশে এসে গ্রামে গেলেও রমনা বটমূলে বর্ষবরণের আয়োজন দেখতে রাতেই ঢাকা এসেছি। এখানে এসে ভালো লাগছে।

ছায়ানটের এ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে স্মরণ করা হয় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের। সকাল সাড়ে আটটার দিকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান শেষের আগমুহূর্তে শিল্পী ও দর্শনার্থীরা দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

পরে ছায়ানটের শিল্পীদের সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে ছায়ানটের এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়।

এ সময় ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের সংগ্রামে অনন্য মাত্রা যুক্ত করেছে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে এই অসাম্প্রদায়িক উৎসব, নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার আয়োজন। আমরা এক আলোকিত দেশ ও সমাজের স্বপ্ন দেখি, যে দেশের মানুষ সর্বজনের শান্তিস্বস্তিনিরাপত্তা নিশ্চিত করে ধর্মজাতিবিত্তের বিভাজন ভাঙবে, গড়বে উদার সম্প্রীতির সহিষ্ণু সমাজ।

তিনি আরও বলেন, নববর্ষের উষালগ্নে, আজ চোখ ফেলি হিসেবনিকেশের হালখাতায়। একদিকে মুক্তির জনআকাঙ্ক্ষা অর্জনের প্রত্যাশা, অন্যদিকে পীড়াদায়ক বিদ্বেষবিভক্তি, নারীশিশুর অমানবিক মর্যাদাহানি ও অপরিণামদর্শী অসহিষ্ণুতা। সকল অতৃপ্তি প্রতিবিধানের দায় রাষ্ট্রের, তবে সমাজকেও সে দায় নিতে হয় বৈকি। সকলে ইতিহাসঐতিহ্য সংরক্ষণ, মুক্তচিন্তার নির্ভয় প্রকাশ, আবহমান সংস্কৃতির নির্বিঘ্ন যাত্রা হৃদয়ে ধারণ করলে, মুক্তির আলোকোজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সুগম হবেই।

গাজায় গণহত্যার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনে, গাজায় ভয়াবহ মানবতার বিপর্যয় এবং গণহত্যায়, বিশেষ করে শিশু হত্যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনবাসী আপন ভূমি রক্ষায় যে সংগ্রাম করছেন, তার প্রতি আমরা সংহতি জানাই।’

এ সময়ে তিনি ইসরাইলের নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে নিহত মানুষদের স্মরণে সবাইকে এক মিনিট নীরবতা পালনের অনুরোধ জানান।

বাংলা বর্ষবরণের এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করা হয় ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলেও এই অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।

ছায়ানট বাংলা বর্ষবরণের এই আয়োজন ১৯৬৭ সাল থেকে রমনার এই বটমূলেই করে আসছে ।

সূত্র: বাসস

আল

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More