আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রমজান মাস।রমজান শুধু সিয়াম সাধনার মাস নয়, বরং আত্মশুদ্ধি, ইবাদত ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক মহাসুযোগ। এই মাসে আমাদের উচিত নিয়মিত এমন কিছু আমল করা, যা আত্মার পরিশুদ্ধি আনে এবং নেকি অর্জনের পথ সুগম করে। নিচে রমজানের জন্য ১০টি গুরুত্বপূর্ণ আমল তুলে ধরা হলো—
১. খাঁটি নিয়তের সঙ্গে রোজা রাখা: রমজান শুধু উপবাস থাকার জন্য নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোজা পালন করা হয়। রাসুল (সা.) বলেছেন— “যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের প্রত্যাশায় রমজানের রোজা রাখে, তার পূর্বের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।” (বুখারি, মুসলিম)
২. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও তাহাজ্জুদে যত্নবান হওয়া: রমজানে নামাজের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া উচিত। পাশাপাশি তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, কারণ এটি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের শ্রেষ্ঠ উপায়।
৩. কোরআন তিলাওয়াত বৃদ্ধি করা: রমজান কোরআন নাজিলের মাস। তাই এ মাসে বেশি করে কোরআন তিলাওয়াত করা উচিত। সম্ভব হলে প্রতিদিন অন্তত কিছু পরিমাণ অর্থসহ তিলাওয়াত করুন এবং আমল করার চেষ্টা করুন।
৪. বেশি বেশি দোয়া ও ইস্তেগফার করা: রমজান দোয়া কবুলের মাস। সাহরির সময়, ইফতারের আগে এবং রাতে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা উচিত। রাসুল (সা.) বলেছেন— “রমজানে প্রতিদিন ইফতারের সময় আল্লাহ বহু মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন।” (তিরমিজি)
৫. নিয়মিত তারাবিহ নামাজ পড়া: তারাবিহ রমজানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি সুন্নতে মুআক্কাদাহ, যা রাসুল (সা.) ও সাহাবিগণ নিয়মিত আদায় করতেন।
৬. দান–সদকা ও অসহায়দের সাহায্য করা: রাসুল (সা.) ছিলেন সর্বাধিক দানশীল ব্যক্তি, বিশেষত রমজানে তাঁর দানশীলতা আরও বৃদ্ধি পেত। তাই সামর্থ্য অনুযায়ী দান–সদকা করুন এবং গরিব–অসহায়দের পাশে দাঁড়ান।
৭. সংযত থাকা ও চরিত্র গঠন করা: রমজানে মিথ্যা বলা, গীবত করা, ঝগড়া করা ও খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। রাসুল (সা.) বলেছেন— “যে ব্যক্তি রোজা রেখেও মিথ্যা কথা বলা ও খারাপ কাজ ছাড়তে পারল না, তার শুধু উপোস থাকা আল্লাহর কোনো দরকার নেই।” (বুখারি)
৮. লাইলাতুল কদর তালাশ করা: রমজানের শেষ ১০ দিনের মধ্যে এক রাত রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। এ রাত পাওয়ার আশায় ইবাদতে মনোযোগী হতে হবে।
৯. আত্মশুদ্ধির চর্চা করা: রমজান আত্মশুদ্ধি অর্জনের উপযুক্ত সময়। অহংকার, হিংসা, লোভ, মিথ্যা ও প্রতারণা থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন।
১০. রমজানের শিক্ষা জীবনে কাজে লাগানো: রমজানে অর্জিত ভালো অভ্যাসগুলো শুধু এই মাসের জন্য নয়, বরং সারা বছরের জন্য ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
রমজান আমাদের জন্য আত্মশুদ্ধির শ্রেষ্ঠ সময়। এই মাসে বেশি বেশি ইবাদত করা, সংযমী হওয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের চেষ্টা করা উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রমজানের বরকতপূর্ণ মুহূর্তগুলোর যথাযথ মূল্যায়ন করার তৌফিক দান করুন।