নজিরবিহীন উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার রংপুর বিভাগের সার্বিক উন্নয়নে পৃথক রংপুর উন্নয়ন কমিশন গঠন এবং দ্রুত তিস্তা জায়ান্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার (৭ই অক্টোবর) টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে বিকেল ৩.৩০ ঘটিকায় এক বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
অবহেলা ও উন্নয়ন বৈষম্যের কারণে রংপুর বিভাগে সৃষ্ট বহুমাত্রিক দারিদ্র্য এবং উচ্চ বেকারত্ব নিরসনে আলাদা শিল্পনীতি, ঋণনীতি, শ্রম নীতি, বিনিয়োগ পরিবেশ এবং বিশেষ বরাদ্দ নিশ্চিতে পৃথক রংপুর উন্নয়ন কমিশন গঠন এবং বন্যা–খরা ও নদী ভাঙনের টেকসই সমাধানে দ্রুত তিস্তা জায়ান্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়নের দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে দীর্ঘদিন থেকে রংপুরের অবহেলা ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব “রংপুর বিভাগ বৈষম্য নিরসন আন্দোলন” নামের একটি সংগঠন।
উক্ত সমাবেশে ঢাকাস্হ রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের অংশগ্রহণের আহবান জানিয়ে এ আন্দোলনের আহবায়ক মেহেদী হাসান সুমন বলেন– বাজেট প্রণয়ন এবং বরাদ্দের ক্ষেত্রে রংপুর বিভাগের মানুষের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হয়।এ বিভাগে বড় কোন বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান, বন্যা–খরা ব্যবস্থাপনায় কোন প্রকল্প কিংবা বহুমুখী দারিদ্র্য বিমোচনে আলাদা কোন পদক্ষেপ আজও নেওয়া হয়নি।এসব বঞ্চনা অবসানের জন্য রংপুরের সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন।
দেশের ১০ টি দরিদ্রতম জেলার ৫ টি রংপুর বিভাগের।বাকি তিনটি জেলাও দারিদ্র্য সূচকের তলানিতে।বছরে দুবার বন্যা এবং শুষ্ক মৌসুমে খরায় এ অঞ্চলের মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় ফলে এ বিভাগে দারিদ্র্যের হার বেড়ে চলেছে।অথচ দেশের অন্যান্য প্রান্তের অর্থনৈতিক অবস্থা রংপুরের চেয়ে বহুগুণ ভালো।
এ প্রসঙ্গে আন্দোলনের সাথে যুক্ত রংপুরের উন্নয়ন বৈষম্য নিয়ে বহুবছর থেকে সরব,নদী গবেষক ও রিভারাইন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন– স্বাধীনতার পর থেকে রংপুর অঞ্চল চরমতম বৈষম্যের শিকার। এই বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে রংপুরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দাবি উত্থাপন করতে হবে। সরকার যদি বৈষম্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চায় তাহলে সরকার কে বাধ্য করতে হবে বৈষম্য দূরীকরণে।
রংপুরের উন্নয়ন না হওয়ার পেছনে ভৌগোলিক অবস্থিতি বড় কোন বাধা নয় বরং রাজনৈতিক নেতৃত্বের অনীহার কারণে উত্তরাঞ্চল বিশেষ করে রংপুর বিভাগে শিল্পায়ন,বৃহৎ কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন সাধিত হয়নি বলে মনে করেন এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত সমাজ–রাজনীতি বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন।তিনি আরো বলেন–অভীন্ন নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনায় কার্যকর কোন পদক্ষেপ অতীতে নেওয়া হয়নি।ফলে বন্যা ও খরায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাজার হাজার পরিবার“।
রংপুর বিভাগের আটটি জেলায় সচেতন মানুষ মাত্রই বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।তারা আঞ্চলিক বৈষম্যের কষাঘাত থেকে মুক্তি চায়।
রংপুর বিভাগের সঙ্গে সারাদেশের অঞ্চলগত উন্নয়ন বৈষম্য দূর করার জন্য সরকার, দেশি–বিদেশি বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাসহ সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার।
এম/ আল/ দীপ্ত সংবাদ