শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
শুক্রবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৫ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি

যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে রোহিঙ্গা কিশোর-কিশোরীরা

দীপ্ত নিউজ ডেস্ক
10 minutes read

কক্সবাজার এবং ভাসানচরের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া কিশোরকিশোরীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। তবে সম্মানহানির ভয়ে তারা এগুলো নিয়ে অভিযোগ করতে চায় না।

ক্যাম্পে থাকা ২৫ শতাংশ কিশোরী এবং ১৮ শতাংশ কিশোর জানিয়েছে তারা অযাচিত যৌন সংস্পর্শের (সেক্সুয়াল কন্ট্যাক্ট) শিকার হয়। আর ২০ বছরের আশেপাশে থাকা ৪৪ শতাংশ তরুণী এবং ৩৩ শতাংশ তরুণও একই অভিজ্ঞতার কথা জানায়। জেন্ডার এন্ড এডোলেসেন্স গ্লোবাল এভিডেন্স (গেজ) প্রোগ্রামের আওতায় করা এক গবেষণায় এ সব তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার (১৫ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে ব্র‍্যাক ইনস্টিটিউট অব গভার্নেন্স এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ব্র‍্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং ব্র‍্যাক বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত লার্নিং ফ্রম রিসার্স অন এডোলেসেন্ট ওয়েলবিয়িং ইন বাংলাদেশশীর্ষক কর্মশালায় এই গবেষণার তথ্য উপস্থাপন করা হয়।

আয়োজকেরা জানান, গবেষণার অংশ হিসেবে কক্সবাজার ও ভাসানচরে আশ্রয় নেওয়া বিভিন্ন বয়সী কিশোরকিশোরী ও নারীপুরুষের ওপর জরিপ পরিচালনা করা হয়। যৌন হয়রানি বিষয়ক জরিপে অংশ নেন ৯০৭ জন।

গবেষণায় দেখা যায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মোবাইলে নারীদের আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে হয়রানির ঘটনা ঘটে থাকে। কিশোরীরা বাসার বাইরে বের হলে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়।

কর্মশালায় বয়:সন্ধীকালীন কিশোরকিশোরীদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাল্যবিয়ে ও দক্ষতা উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করা হয়। উন্নয়নকর্মী, বিশেষজ্ঞ ও সরকারি কর্মকর্তারা বলেন, বাংলাদেশে বাল্যবিয়ে একটি বড় সমস্যা। যৌন হয়রানি বাল্যবিয়ের একটি কারণ। বিভিন্ন নীতি ও পদক্ষেপ থাকা সত্ত্বেও বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতেও বাল্যবিয়ে কিশোরীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের জন্য বোঝা। তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন প্রয়োজন। কিশোরকিশোরীদের সম্পর্কে তিনি বলেন, বয়ঃসন্ধিকালের ছেলেমেয়েদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতার একটি গুরুতর সমস্যা রয়েছে। কারণ এই সময়ে তারা শরীর ও মনের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য, সুশিক্ষা এবং অন্যান্য দিক নিশ্চিত করতে হবে, যাতে আমরা বড় হওয়ার ইতিবাচক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে পারি।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান বলেন, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু আমাদের ডেটার কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাল্যবিয়ের খবর পেলে সেখানে যায় এবং বাল্যবিয়ে বন্ধ করে।অভিভাবকদের শাস্তি দেয়। কিন্তু শাস্তি দেওয়া বাল্যবিয়ে প্রতিরোধের পথ হতে পারে না।

ইউএনএফপিএ এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার মুহাম্মদ মুনির হোসেন বলেন, মেয়েরা মাধ্যমিকে ভালো করছে। ছেলেরা পিছিয়ে পড়ছে। অনেকেই অর্থনৈতিক কারণে পড়াশোনা ছেড়ে কাজে যুক্ত হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই তার হাতে টাকা আসতে শুরু করছে। তখন সে বিয়ে করছে। আর পাত্রী হিসেবে অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরী মেয়েদের বেছে নিচ্ছে৷ এটাও বাল্যবিয়ের একটা কারণ হতে পারে। এটা নিয়েও কাজ করা দরকার।

কর্মশালায় বক্তারা কিশোরকিশোরীদের শিক্ষা, সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহবান জানান।

আল / দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More

সম্পাদক: এস এম আকাশ

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.