পাঁচ কোটি টাকা চাঁদা না দেওয়ায় রাজধানী যাত্রাবাড়ী এলাকায় ‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস’ পরিবহনের একাধিক বাস ভাঙচুর ও শ্রমিকদের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সাবেক যুবদল নেতা মুশফিকুর রহমান ফাহিম ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১২ জুন) সকাল ১০টায় শরীয়তপুরে জেলা বাস মালিক সমিতি অফিসে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন বাস মালিক–শ্রমিকরা।
এ ঘটনায় পর থেকে যাত্রাবাড়ী–শরীয়তপুর রুটে যাত্রীসেবা বন্ধ করে দিয়েছেন পরিবহন মালিক–শ্রমিকরা।
‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস’ পরিবহন চালক মাসুদ রানা বলেন, “যাত্রাবাড়ী গেলেই বিএনপি কিছু নেতা আমাদের বাস ভেঙে ফেলে। শ্রমিকদের মারধর করে। সেই ভয়ে ৫ দিন ধরে বাস চালাতে পারছি না। বিষয়টির সমাধান চাই। আমার পরিবার নিয়ে চলতে কষ্ট হচ্ছে।”
মারধরের শিকার নয়ন ব্যাপারী নামে এক বাস শ্রমিক বলেন, “যাত্রাবাড়ী যাওয়ার পর হঠাৎ আমাদের বাসে হামলা চালায় ফাহিমের লোকজন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা বাসের গ্লাস ভেঙে ফেলে। আমাকেও জখম করা হয়েছে। আমরা যাত্রাবাড়ী রুটে বাস চালাতে পারছি না।”
শরীয়তপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি ফারুক আহম্মেদ চৌকিদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যাত্রাবাড়ী রুটে চাঁদাবাজি হয়ে আসছিল, তবে সেটা সহনশীল পর্যায়ে ছিলো। সম্প্রতি এক যুবদল নেতা আমাদের মালিক সমিতির কাছ থেকে ৫ কোটি চাঁদা দাবি করেছেন। তাকে টাকা না দেওয়ায় আমাদের বাস ভাঙচুর ও শ্রমিক মারধর করা হচ্ছে। আমরা এই সমস্যা থেকে মুক্তি চাই
এদিকে, চাঁদা দাবির বিষয়টি অস্বীকার করে যাত্রাবাড়ী থানা যুবদল সাবেক সহ–সভাপতি মুশফিকুর রহমান ফাহিম বলেন, “আমাদের গাড়ির রুটপারমিট থাকার পরেও শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতি সেগুলোকে অন্য উপজেলায় যেতে দিচ্ছে না। এখন তারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। আমি কারো কাছে ৫ কোটি টাকা দাবি করিনি। আমি চাঁদাবাজি করে থাকলে আমরা বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হোক। অভিযোগ প্রমাণ হলে আমি আমার অপরাধ মাথা পেতে নেব।”
শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা জানতে পেরেছি ‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস’ পরিবহন যাত্রাবাড়িতে প্রবেশ করতে পাচ্ছে না এবং কতিপয় দুষ্কৃতকারী চাঁদা দাবি করেছে, বাসে ভাঙচুর করছে। ঘটনাটি জানার পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সংশ্লিষ্ট ক্রাইম বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা যৌথভাবে কাজ করছি।
উল্লেখ্য, জেলা বাস মালিক সমিতি সূত্র জানায়, শরীয়তপুর থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা এলাকায় যাত্রীপরিবহন করে আসছে ‘শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস’ পরিবহনের ২ শতাধিক বাস। এ রুটে প্রতিনিয়ত ঢাকা ও শরীয়তপুর যাতায়াত করে অন্তত ৩০ হাজার যাত্রী।
এসএ