বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে আজকের অবস্থা পর্যন্ত সর্বদায় সাংবাদিকদের সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। এ সময় একটা ফোনকল জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছে উল্লেখ করে দেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় অমর একুশে বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণে ঝুমঝুমি প্রকাশনের (৭১ ও ৭২ নম্বর স্টল) সামনে সিনিয়র সাংবাদিক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের ‘যাপিত জীবনের গল্প’ জীবনী গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমার একটা জীবন ছিল৷ তা একটা টেলিফোন এসে পরিবর্তন করে দিয়েছ। আমি বাসায় বসে টেলিভিশন দেখছিলাম। তখন একট কল এসে সব বদলে। আমি আগে বাসায় বিশ্রাম নিতাম, এখন সারাদেশ চষে বেড়াচ্ছি। কারণ আমি মানুষের দোড়গোড়ায় স্বাস্থ্যাসেবা পৌঁছে দিতে চাই। আমি যদি টেকনাফ থেকে তেতোলিয়া স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে পারি, তাহলে ঢাকার হাসপাতালগুলোতে এত ভিড় হবে না।
কাজ করার প্রত্যয় জানিয়ে তিনি বলেন, বার্নের চিকিৎসক হিসেবে জানি এই রোগীরা কতয়া কষ্ট করেন৷ ঢাকার বাইরে বার্ন ইউনিট নেই। গরীব মানুষকে কষ্ট করে ঢাকায় আসতে হয়। আমি এ ধরনের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে কাজ করছি। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলে দ্রুত সমস্যাগুলো সমাধানে কাজ করবো। শতভাগ না পারলেও ৫০ ভাগ করতে পারলেও আমি নিজেকে সফল মনে করবো।
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের বই সম্পর্কে সামন্ত লাল বলেন, মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল আমার সাথে কাজ করেছে। সে আমার জীবনের উত্থানসহ অনেক কিছুর সাক্ষী। কেমন করে শূন্য থেকে বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপন করলাম এবং সেখান থেকে আজকের জায়গায় আসাসহ সব কিছুর সাক্ষী সে। আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ।
আরও পড়ুন: বিখ্যাত ১৫ কবিতার নেপথ্যের গল্প
সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিক ভাইয়েরা আমাকে সর্বদা সহযোগিতা করেছে। ৫ থেকে ৫০০ শয্যার বার্ন ইনস্টিটিউট স্থাপনে সাংবাদিকরা অনেক অবদান রেখেছে। সাংবাদিক আমার সাথে থেকে, সমস্যাগুলো সারা পৃথিবীর কাছে তুলে ধরেছেন। তার জন্য আজকে বার্ন হাসপাতাল বিশ্বে সর্ব–বৃহৎ বার্ন হাসপাতাল হিসেবে বানাতে পেরেছি। সাংবাদিকদের অনেক কষ্ট সহ্য করে কাজ করতে হয়। কিন্তু সত্য সংবাদ প্রকাশ করলে যে, তা কত উপকারে আসে আমি তার প্রমাণ।
‘যাপিত জীবনের গল্প‘ বইয়ের লেখক সাংবাদিক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, সাংবাদিকতা জীবনে গত তিন দশকে নানা ঘটনা দেখেছি। যার অনেকটাই রিপোর্ট আকারে প্রকাশ পায় না। আমি সেগুলোই ফেসবুকে তুলে ধরছিলাম। পরে জেষ্ঠ্য সাংবাদিক আরিফ ভাইয়ের পরামর্শে বই আকারে প্রকাশ করলাম। এক্ষেত্রে আমার পরিচিত সাংবাদিকরা অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মহোদয় এসেছেন। তার সাথে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। স্যার সব সময় সহযোগিতা করেছেন। তেমনই একটি মেয়েকে পাঠানোর ঘটনা বইয়ে উল্লেখ আছে। বার্ন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় তার যে অক্লান্ত পরিশ্রম তাও এখানে উঠে এসেছে।
এ সময় সাংবাদিকতার জীবন যাপন বিষয়ে যাদের জানার আগ্রহ রয়েছে, তারা বইটির মাধ্যমে তা জানতে পারবেন উল্লেখ করে জেষ্ঠ্য এ সাংবাদিক বলেন, অনেকে সাংবাদিকতাকে ফ্যান্টাসি মনে করেন। কিন্তু প্রকৃত সাংবাদিকতা করতে হলে অনেক দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতা হয়।
জেষ্ঠ্য সাংবাদিক আরিফ সোহেলের সঞ্চালনায় মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ, ক্র্যাবের সভাপতি কামরুজ্জামান খান, ঝুমঝুমি প্রকাশনির প্রকাশক শায়লা রহমান তিথিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের জেষ্ঠ্য সাংবাদিকরা।
৩৪টি উল্লেখযোগ্য ঘটনার গল্প নিয়ে ‘যাপিত জীবনের গল্প’ বইটির প্রথম খণ্ড সাজানো হয়েছে।
আল / দীপ্ত সংবাদ