বুধবার, অক্টোবর ২৯, ২০২৫
বুধবার, অক্টোবর ২৯, ২০২৫

মেট্রোরেলের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল কাজে ১৮৫ কোটি টাকা সাশ্রয়

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে রাজধানীর মেট্রোরেলের মতিঝিলকমলাপুর অংশে ইলেকট্রোমেকানিক্যাল কাজে প্রায় ১৮৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

বুধবার (২৯ অক্টোবর) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে জানানো হয়, মেট্রোরেলের মতিঝিল থেকে কমলাপুর অংশের ইলেকট্রোমেকানিক্যাল সিস্টেমের কাজের জন্য ২০১৮ সালের জুন মাসে দরপত্র দাখিলকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সম্প্রতি নিয়োগ করা হয়েছে।

এই কাজের প্রাথমিক ব্যয় নিয়ে সম্প্রতি কিছু প্রশ্ন উঠলেও, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সফল দরকষাকষির মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করেছে।

সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (আরডিপিপি) (দ্বিতীয় সংশোধনী) এই খাতে ২৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। কার্যত ২৭৪ কোটি টাকা আরডিপিপি বরাদ্দ একটি অনুমোদিত ব্যয়।

প্রকৃত ব্যয় দরপত্র মূল্যায়নের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, যা মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার বিনিময় হার পরিবর্তন, কাঁচামাল সরবরাহের জটিলতা এবং পরিবহন খরচ ইত্যাদির ওপর নির্ভরশীল।

জুলাই ২০২৩ সালে মারুবেনিএল এন্ড টিএর প্রস্তাবিত মূল্য ছিল প্রায় ৬৫০ কোটি টাকা। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার এতো বেশি দরে কাজ করাতে অনীহা প্রকাশ করে। অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ এক্ষেত্রে নেগোসিয়েশন স্ট্রাটেজি গ্রহণ করে এবং দীর্ঘ আলোচনা ও দরকষাকষি করে ৪৬৫ কোটি টাকায় কাজটি করাতে উভয়পক্ষ সম্মত হয়। সেই সঙ্গে ১ বছর ডিএপি (ডিফ্যাক্ট নোটিফিকেশন পিরিয়ড) বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়েছে।

উল্লেখ্য, উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের ইলেকট্রোমেকানিক্যাল কাজ মারুবেনিএল এন্ড টি সম্পাদন করেছিল, সেক্ষেত্রে একই ঠিকাদার থাকায় মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত কাজে সিস্টেম ইনটিগ্রেশনএ সুবিধা হবে।

এই চুক্তির মাধ্যমে প্রায় ১৮৫ কোটি টাকা নিট সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে এবং এই চুক্তি সরকারের ‘ব্যয় অপ্টিমাইজেশান’ (খরচ যৌক্তিকীকরণ) নীতির প্রতিফলন।

একই সঙ্গে, প্রকল্পে অর্থায়নকারী সংস্থা জাইকা’র সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী তাদের মনোনীত ঠিকাদার দিয়েই কাজটি সম্পন্ন করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা সত্ত্বেও স্বচ্ছতা ও কঠোর দরকষাকষির মাধ্যমে জনগণের অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পূর্ববর্তী আন্দোলন সংগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত কাজিপাড়া ও মিরপুর১০ সহ অন্যান্য মেট্রোরেল স্টেশনগুলো মাত্র ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে এবং আড়াই মাসে মেরামত সম্পন্ন করা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী সরকারের আমলে ৩৫০ কোটি টাকায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মেরামতের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।

সম্প্রতি পিকআওয়ারে পরবর্তী ট্রেনের জন্য অপেক্ষার সময়সীমা ৮ মিনিট থেকে কমিয়ে ৬ মিনিট করা হয়েছে, যা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মাত্র ৫ মিনিটে আনা হবে। এছাড়াও সম্প্রতি মেট্রো রেলের পরিষেবার সময় ১ ঘণ্টা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

এছাড়া, ভাড়াবহির্ভূত আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে স্টেশন ও ট্রেনের অভ্যন্তরে বাণিজ্যিক স্থান, ব্যাংক, এটিএম ও সিআরএম বুথ স্থাপন এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপনের মতো কাজের চুক্তিগুলো চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার প্যানেল স্থাপনের চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

প্রতিটি প্রকল্পের ব্যয় সাশ্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় নকশা সংশোধন, দর বিশ্লেষণ ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে দর তুলনার মাধ্যমে সর্বনিম্ন স্তরে প্রাক্কলন নির্ধারণের কাজ চলমান আছে।

মেট্রো রেলের পরিচালনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এছাড়াও রিয়েলটাইম টেকনোলজি ট্রান্সফার, ডিএমটিসিএলের ইনস্টিটিউশনাল ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করা, স্থানীয়ভাবে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করা এবং স্থানীয় শিল্পের বিকাশে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More