বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার, জুন ৩, ২০২৫
মঙ্গলবার, জুন ৩, ২০২৫

মেজর সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক
প্রকাশ: সর্বশেষ সম্পাদনা:

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে দেয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ছয় আসামির যাবজ্জীবন বহাল রেখেছেন আদালত।

সোমবার (২ জুন) বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে, গত ২৯ মে বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন।

গত ২৩ এপ্রিল এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শুরু হয়। ২১ এপ্রিল আলোচিত এ হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। একইসঙ্গে মামলার যাবতীয় নথি বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি মো. সগীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠানো হয়।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজারটেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন কর্মকর্তা পরিদর্শক লিয়াকত আলীর পরপর চারটি গুলিতে ঘটনাস্থলে নিহত হন মেজর সিনহা। এর পাঁচদিন পর আদালতে মামলা করেন নিহত সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় র‍্যাব। অভিযোগপত্রে সিনহা হত্যাকাণ্ডকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক মো. লিয়াকত আলীকে মৃত্যুদণ্ড, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাগর দেবকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এ ছাড়া কক্সবাজারের বাহারছড়ার মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন, মোহাম্মদ আইয়াজ ও মো. নিজাম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান বাকি সাত আসামি। পরে মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। একই সঙ্গে আপিল করেন দণ্ডিতরা।

এর আগে ২০২২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি লিয়াকত আলী বেকসুর খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। পটিয়ার অধিবাসী লিয়াকত আলী ঘটনার সময় বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক ছিলেন। পরে তাকে বরখাস্ত করা হয়। সে মাসের ৮ ফেব্রুয়ারি সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকত আলীর ডেথ রেফারেন্স গত ৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টে পৌঁছায়।

সিনহা ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণবিষয়ক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের জন্য প্রায় এক মাস কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকার একটি রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন। ওই কাজে তার সঙ্গে ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ।

তখন কক্সবাজারের পুলিশ বলেছিলেন, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে তল্লাশিতে বাধা দেন। পরে পিস্তল বের করলে চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী তাকে গুলি করেন। ঘটনার পাঁচ দিন পর ২০২০ সালের ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‍্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্ত শেষে র‍্যাব ১৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়।

এ মামলার আসামিরা হলেনটেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বরখাস্ত পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আলমামুন, মোহাম্মদ মোস্তফা, এপিবিএনের তিন সদস্য এসআই মোহাম্মদ শাহজাহান, কনস্টেবল মোহাম্মদ রাজীব ও মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী নুরুল আমিন, নেজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াজ, টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মা ও সাবেক এএসআই সাগর দেব।

অপরদিকে, সিনহা নিহতের ছয় দিন পর পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে টেকনাফ থানার পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী ও শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী এপিবিএনের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মা।

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More