জাদুকরের জাদু থেমে গেল ক্যারিবিয়ান ঝড়ে। মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা আর পারলেন না। পারল না সিলেট স্ট্রাইকার্সও। প্রথম শিরোপা ছোঁয়ার চেয়ে হাতখানেক দূরত্বেই থামতে হলো মাশরাফি এবং সিলেটকে।
বিপিএলের নবম আসরের ফাইনাল হয়েছে ফাইনালের মতোই। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ ঘুরেছে পেন্ডুলামের মতো। লড়াইয়ে কখনো এগিয়েছে সিলেট আবার কখনও কুমিল্লা। তবে শেষ হাসিটা হেসেছে ইমরুল কায়েসের দল। ফাইনালে না হারার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রেখে চতুর্থবারের মতো বিপিএলের শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার সিলেটকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ৫২ বলে ৭৯ রান করে কুমিল্লার জয়ের নায়ক জনসন চার্লস।
এর আগে টস জিতে নিজের পছন্দেই বোলিং নিয়েছিলেন কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। কিন্তু প্রথম ওভারে আন্দ্রে রাসেল অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। শান্তর তিন বাউন্ডারি ও একটি বাই রানের বাউন্ডারিতে প্রথম ওভারেই ১৮ রান করে সিলেট। শুরুটা উড়ন্ত হলেও দ্বিতীয় ওভারেই লাগাম টেনে ধরেন তানভীর ইসলাম।
ওভারের প্রথম বলেই ফর্মে থাকা তৌহিদ হৃদয়কে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার। আগের দুই ম্যাচে সাফল্য পেলেও আজ তিনে নেমে ব্যর্থ মাশরাফি বিন মুর্তজা। ১ রানে আন্দ্রে রাসলের বলে ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন অধিনায়ক। এরপর দলের হাল ধরেন শান্ত ও মুশফিক। দুজনে মিলে গড়েন ৭৯ রানের অনবদ্য এক জুটি।
৬৪ রান করে মইন আলীর বল সামনে এসে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন শান্ত। শান্তর বিদায়ের পর আসেন রায়ান বার্ল। শুরু থেকেই একের পর সুযোগ দিলেও কয়েকবার তার ক্যাচ মিস করেন কুমিল্লার ফিল্ডাররা। শেষমেষ ১৩ রান করে মুস্তাফিজের বলে কাটা পড়েন তিনি।
নিয়মিত সাত কিংবা আট নম্বরে নামা থিসারা পেরেরা আজ এসেছিলেন ছয় নম্বরে। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার। প্রথম বলেই হয়েছেন বোল্ড। জর্জ লিন্ডে ৯ রান করার পথে জীবন পেয়েছেন দুইবার, ফিরেছেন মুস্তাফিজের বলে।
এক প্রান্তে কেউই থিতু হতে না পারলেও অন্য প্রান্ত আগলে ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম। শেষ পর্যন্ত ৭৪ রানে অপরাজিত থেকে দলকে ১৭৬ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেন।
১৭৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত শুরু করেছিল কুমিল্লা। তবে সুনিল নারিনকে ১০ রানের বেশি করতে দেননি রুবেল হোসেন। এই ক্যারিবিয়ান ওপেনার সাজঘরে ফিরলে ভাঙ্গে ২৭ রানের উদ্বোধনী জুটি। এরপর ইমরুল কায়েসও দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন। অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ২ রান।
ভালো শুরুর পর ৩৪ রানের মধ্যেই দুই টপ অর্ডার ব্যাটারকে হারিয়ে কিছুটা হলেও বিপাকে পড়েছিল কুমিল্লা। তবে জনসন চার্লস এবং লিটন দাসের ব্যাটে সেই শঙ্কা কাটিয়ে আবারও চালকের আসনে বসে গতবারের ইমরুলের দল। এই দুই ব্যাটার মিলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৭০ রান।
শেষ চার ওভারে ৪৮ রান প্রয়োজন ছিল কুমিল্লার। এমন সমীকরণের সামনে ১৭তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন রুবেল। এই পেসারের শেষ তিন বলে এক চারের সঙ্গে দুই ছক্কা হাঁকান চার্লস। সবমিলিয়ে এই ওভারে ২৩ রান তুলে সমীকরণ সহজ করে ফেলে কুমিল্লা।
আল/দীপ্ত