প্রথমবারের মতো সন্তান জন্ম দিয়েছেন গৃহবধু রোমানা ইসলাম (২২)। তবে একটি বা দুটি নয়, একসঙ্গে চার সন্তান এসেছে তাঁর কোলে। প্রসূতিসহ দুই সন্তান সুস্থ রয়েছে। তবে অপর দুই সন্তানের শ্বাসকষ্ট থাকলেও শঙ্কামুক্ত বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।
সোমবার (১০ জুলাই) সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসূতি রোমানার চার সন্তান জন্ম হয়। একসঙ্গে চার নতুন অতিথি আসায় পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস বিরাজ করছে।
প্রসূতির স্বজনেরা জানান, ২০২১ সালের ১৫ মে শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের ধানধারা গ্রামের শেখ মো. সালামের ছেলে শেখ মো. নয়নের সঙ্গে একই ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের বাবুল বিশ্বাসের মেয়ে রোমানার বিয়ে হয়। গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে রোমানার প্রসব–ব্যথা দেখা দেয়। এর পর রাত ১০টার দিকে রোমানাকে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনেরা। এর পর আজ সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসূতির চার সন্তান জন্ম হয়। সন্তানদের মধ্যে দুইজন ছেলে ও দুইজন মেয়ে।
একসঙ্গে চার নতুন অতিথি আসায় পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে আনন্দ ও উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। নবজাতকদের দাদা শেখ সালাম, দাদি নাজমা বেগম, নানা বাবুল বিশ্বাস, নানী নাজমা খাতুন, ফুফু মুন্নী আক্তারসহ স্বজনেরা হাসপাতালে ছুটে এসেছেন। তাঁরা নতুন অতিথিদের দেখতে অধীর আগ্রহে গাইনী ওয়ার্ডে ভিড় করেছেন। নবজাতক সন্তানদের এবং প্রসূতি স্ত্রীর চিকিৎসায় ওষুধপত্র যোগান দিতে বাবা শেখ নয়ন ব্যস্ততায় রয়েছেন। ব্যস্ততার মাঝেও তাঁর মধ্যে আনন্দে উৎফুল্লতা দেখা গেছে।
নবজাতকদের দাদি বলেন, ‘একসঙ্গে চারজন নাতি ও নাতনি পেয়েছি। এর চেয়ে আনন্দ আর কি আছে? আল্লাহ যেন ওদের সুস্থ রাখে।’ নবজাতকদের বাবা শেখ নয়ন কৃষিকাজ করেন। তিনি বলেন, ‘চার সন্তান পেয়েছি। ঈদের খুশির চেয়ে বেশি খুশি আমরা।’
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের জ্যেষ্ঠ নার্স মাবিয়া আক্তারকে ওয়ার্মার সেন্টারে শিশুদের সেবাযত্ন করছেন। তিনি বলেন, নবজাতকদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ওয়ার্মার যন্ত্রে রাখা হয়েছে। হাসপাতালের গাইনী বিভাগের শিশু ওয়ার্ডে পৃথক ওয়ার্মার যন্ত্রে ওই চার নবজাতককে রাখা হয়েছে। আর গাইনী ওয়ার্ডের শয্যায় প্রসূতি রোমানাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে
হাসপাতালের রেসিডেন্সি ফিজিশিয়ান (আরপি) চিকিৎসক আবু সাঈদ মো. আসলামের তত্ত্বাবধানে নবজাতকদের চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসক আবু সাঈদ বলেন, চার নবজাতকের মধ্যে দুই ছেলে নবজাতকের শ্বাসকষ্ট কিছুট বেশি। ধীরে ধীরে তাদের শ্বাসকষ্ট কমছে। অপর দুই মেয়ে নবজাতকের শ্বাসকষ্ট দেখা দিলেও অনেকটা স্বাভাবিক পর্যায়ে এসেছে। নবজাতকেরা শঙ্কামুক্ত রয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক।
জাহিদুল হক চন্দন /আল / দীপ্ত সংবাদ