বাংলাদেশ ব্যাংকে ভুয়া পরিচয়ে টানা এক যুগ (১২ বছর) চাকরি করার পর ধরা পড়লেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসে যুগ্ম পরিচালক হিসেবে কর্মরত ‘ওয়ারেস আনসারী‘।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) মো. আব্দুল ওয়ারেস আনসারী পরিচয় ও তথ্য ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রাজশাহী আঞ্চলিক অফিসে যুগ্ম পরিচালক হিসেবে কর্মরত ‘ওয়ারেস আনসারী‘ ধরা পড়েছেন। তিনি ২০১৩ সালের ২২ জুলাই সহকারী পরিচালক (সাধারণ) হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দিয়েছিলেন।
আরিফ হোসেন আরও বলেন, প্রায় ১২ বছর পর মঙ্গলবার (২৭ মে) ভুয়া আনসারীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আরও কেউ এমন সুযোগ নিয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যবস্থা নেবে।
জানা যায়, ২০১৩ সালে মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী বাংলাদেশ ব্যাংক ও ৩১ বিসিএস, প্রশাসন ক্যাডারে চাকরি হয়। তবে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ না দিয়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক।
নিয়োগ পেয়েও মো. আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ না দেওয়ায় সেই সুযোগটিকে কাজে লাগান বাংলাদেশ ব্যাংক মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. শাহজাহান মিঞা।
আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী‘র জায়গায় নিজ ভাগনে‘কে নিয়োগ দেন। এ জন্য ভাগনের নাম বদলে ‘আব্দুল ওয়ারেছ আনসারী‘ রাখা হয়। শাহজাহান মিঞার ভাগনে ভুয়া ‘ওয়ারেস আনসারী‘ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাকরি করেন ১২ বছর, দুটি পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন যুগ্ম পরিচালক।
সম্প্রতি এক তদন্তে এই তথ্য বেরিয়ে আসার পর মো. শাহজাহান মিঞাকে বরখাস্ত ও তাঁর ভাগনে (ভুয়া ‘ওয়ারেস আনসারী‘) নিয়োগ বাতিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জ এডিসি হিসেবে দায়িত্বরত প্রকৃত ‘আব্দুল ওরায়েছ আনসারী‘ বলেন, ‘আমি ২০১৩ সালে ৩১তম বিসিএস এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। পরে আমি সিভিল সার্ভিসে যোগ দেই। আমি জানতাম না যে, আমার পরিচয়ে কেউ বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করছে।’
উল্লেখ্য, ভুয়া ‘ওয়ারেস আনসারী‘ ২০২৫ সালের ২৭ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন।
এসএ