বিজ্ঞাপন
সোমবার, মে ১২, ২০২৫
সোমবার, মে ১২, ২০২৫

ভালো দাম পেয়ে রাজশাহীর বোরো চাষিদের মুখে হাসি

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

রাজশাহীর কৃষকদের মুখে এখন হাসি। শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটার মৌসুম। মাঠে মিলছে ভালো ফলন, আর বাজারেও মিলছে ভালো দাম। বরেন্দ্র অঞ্চলসহ জেলার সর্বত্রই চাষিরা ধান বিক্রি করে সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৬৮ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার কারণে মাঠে ফলন হচ্ছে আশানুরূপ। কৃষকরা গড়ে প্রতি বিঘায় পাচ্ছেন ২৪ থেকে ২৫ মণ ধান। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় বেশ লাভজনক।

কৃষকরা এখন উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদি জাত ‘বিআর২৮’ ও স্থানীয় ‘জিরা’ কাটছে। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে অন্যান্য জাতের ধানও কাটতে শুরু করবে।

চাষিদের মুখে হাসি

তানোর উপজেলার ধানতৈড় গ্রামের কৃষক আফসা আলী (৪৮) জানান, দুই বিঘা জমি থেকে ৪০ মণ ধান পেয়েছি। নিজের জমিতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা, আর বর্গা জমিতে ২৫ হাজার।’ তিনি আরও জানান, সেচের ব্যবস্থা না থাকলে খরচ বেড়ে যায়।

আরেক কৃষক আবদুস সালাম বলেন, ‘এক বিঘা থেকে ২৫ মণ ধান পেয়েছি। এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি ফলন। আগামী তিন দিনের মধ্যে আরও সাত বিঘার ধান কাটব।’ তিনি আরও জানান, পাইকারি বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে ১,২০০ থেকে ১,৫০০ টাকায়।

চরের জমিতেও ভালো ফলন

গোদাগাড়ী, পবা ও বাঘা উপজেলার চরের জমিতেও এবার বোরো চাষ হয়েছে। মোট ১৭৬২ হেক্টর চরের জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। ফলন হয়েছে আশানুরূপ।

পবা উপজেলার চর খিদিরপুর গ্রামের মিরশাদ আলী বলেন, ‘চরের মাটিতে আলাদাভাবে সার দিতে হয়নি। তাই খরচও কমেছে।’

চর আষাড়িয়াদহ গ্রামের ইসমান গনি জানান, ‘চরের জমিতে এবার বোরোর ফলন বেশি হয়েছে। অনেক কৃষক লাভবান হয়েছেন।’

কৃষি কর্মকর্তাদের মতামত

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতনু সরকার বলেন, ‘আবহাওয়া ও সরকারি সহায়তার কারণে এবার ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকেরা সন্তুষ্ট।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে সালমা শুক্রবার বাসসকে জানান, ৮ মে পর্যন্ত জেলার ২৫ শতাংশ জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে।

উন্নত জাতেই মিলছে সাফল্য

গোদাগাড়ী উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামের কৃষক সামাদুল ইসলাম ব্রি৯২ জাতের ধান চাষ করে প্রতি হেক্টরে ৮.৮ টন ধান পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এটা স্থানীয় জাতের তুলনায় অনেক ভালো ফলন।’

একই উপজেলার হাতিবান্ধা গ্রামের জাকির হোসেন জানান, সরকারি ক্রয় কার্যক্রমের কারণে আগের মৌসুমগুলোতে দাম ভালো পেয়েছেন। এজন্য এবার অনেকে বেশি জমিতে বোরো চাষ করেছেন।

তানোর উপজেলার গুবিরপাড়া গ্রামের আবু রহমান বলেন, গতবার আমনএ ভালো দাম পেয়েছিলাম। এবার ১০ বিঘা জমিতে বোরো করেছি। ফলন ও দাম দুটোই ভালো।’

ব্রি’র বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুনঅররশিদ জানান, রাজশাহীর জন্য উপযোগী ১৪টি বোরো জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্রি৫০ রপ্তানিযোগ্য উন্নত জাত, ব্রি৫৮ উচ্চ ফলনশীল এবং ব্রি৮৪ আয়রন ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ।

তিনি বলেন, ‘আ​ধুনিক জাতের ধানের প্রতি কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। এটি ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More