বাংলাদেশ ও ভারতে কিডনি পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের অ্যাপোলো হাসপাতালের বিজয়া কুমারী নামে এক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দিল্লির কাছাকাছি নয়ডা শহরের ‘যথার্থ হাসপাতাল’–এ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ডা. বিজয়া অন্তত ১৬ জনের কিডনি অপসারণ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যাদের কিডনি অপসারণ করেছেন, তাদের বেশির ভাগই বাংলাদেশি। কিডনি পাচারকারী চক্রের সদস্য হিসেবে ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে তিনি এসব অস্ত্রোপচার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কিডিন পাচারের চক্রটি বেশ সক্রিয়। তারা ‘থার্ড পার্টি’ বা দালালের মাধ্যমে দরিদ্র বাংলাদেশিদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে দিল্লির আশপাশের এসব হাসপাতালে নিয়ে আসত। হাসপাতালগুলোর কয়েকজন চিকিৎসক এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। তারাই কিডনি অপসারণ করতেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, গত তিন মাসে কিনডি পাচারকারী চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ। ডা. বিজয়া কুমারী চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে গ্রেপ্তার হলেন।
দিল্লিতে বেশ কয়েকটি চক্র সক্রিয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ডা. বিজয়া যে চক্রের সদস্য, সেই চক্রের বেশির ভাগই বাংলাদেশি। এমনকি গত তিন মাসে যে তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, তারাও বাংলাদেশি।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশিদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চক্রটি দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে অপারেশন সংক্রান্ত ভুয়া নথি জমা দিত। ইতোমধ্যে পুলিশ কিছু ভুয়া নথি জব্দও করেছে।
দিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালে জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ও কিডনি প্রতিস্থাপনবিষয়ক সার্জন হিসেবে কাজ করতেন ডা. বিজয়া কুমারী। তিনি নয়ডার যথার্থ হাসপাতালেও ভিজিটিং কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করতেন।
যথার্থ হাসপাতালের অতিরিক্ত মেডিকেল সুপারিটেন্ডেন্ট সুনীল বালিয়ান বলেন, ‘ডা. বিজয়া যেসব রোগীর কিডনি অপসারণ করেছেন, তারা কেউই যথার্থ হাসপাতালের রোগী ছিলেন না। ভিজিটিং কনসালটেন্ট হিসেবে তিনি হাসপাতালে রোগী ভর্তির সুপারিশ করতে পারতেন। যে ১৫–১৬ জন বাংলাদেশির কিডনি তিনি অপসারণ করেছেন, তাদের সবাইকে তার সুপারিশেই ভর্তি করা হয়েছিল।