ভারতের ওড়িশায় মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আহত হয়েছেন ৯০০ জন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
শনিবার (৩ জুন) সকালে ওড়িশার মুখ্য সচিব পি কে জেনা বলেন, মৃতের সংখ্যা ২৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনায় প্রায় ৯০০ জন আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, এখনও অনেকে ট্রেনের ভেতরে আটকা পড়ে আছেন। তাদের উদ্ধারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জরুরি সেবাকর্মীরা। ফলে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
রাজ্যের মুখ্যসচিব প্রদীপ জেনা জানিয়েছেন দুর্ঘটনাস্থল বালাসোরে অন্তত ২০০টি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ১০০জন অতিরিক্ত ডাক্তার সেখানে সেবায় নিয়োজিত করা হয়েছে।
এই শতকে এটি ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে। ওডিশা রাজ্যের বালাসোরে স্থানীয় সময় শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যে সাতটার দিকে মোট তিনটি ট্রেন দুর্ঘটনায় পড়ে বলে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়।
ভারতের রেলবিভাগ জানায়, প্রথমে করমন্ডল এক্সপ্রেস নামের একটি যাত্রীবাহী ট্রেন – যা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাওড়ার নিকটবর্তী শালিমার থেকে তামিলনাড়ু রাজ্যের চেন্নাই যাচ্ছিল – সেটির কয়েকটি বগি লাইনচ্যূত হয় এবং পাশের লাইনে থাকা আরেকটি দ্রুতগামী যাত্রীবাহী ট্রেন সেগুলোকে আঘাত করে। দ্বিতীয় ট্রেনটি বেঙ্গালুরু থেকে হাওড়া যাচ্ছিল। এর পর দাঁড়িয়ে থাকা একটি মালবাহী ট্রেনের সাথেও যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোর ধাক্কা লাগে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সবচেয়ে আশঙ্কার কথা হচ্ছে ওই ট্রেনে করে প্রতিদিন অসংখ্য বাংলাদেশি পর্যটক দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসা করাতে যান। এখনও পর্যন্ত ওই ট্রেন থেকে কোনো বাংলাদেশির আহত বা নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ উপ–হাইকমিশন কলকাতা অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
এ ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুঃখ প্রকাশ করেছেন । তিনি টুইট করে বলেন, ‘ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই দুঃসময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহত ব্যক্তিরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। পরিস্থিতি নিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গেও কথা বলেছি।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও এ দুর্ঘটনায় দু:খ প্রকাশ করেছেন।
ট্রেন দুর্ঘটনার খবরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি নিহত ও আহতদের পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছেন। এছাড়া এই দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে বিশেষ অনুরোধ করেছেন।
এছাড়া দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ রুপি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মোদি। পাশাপাশি আহতদের ৫০ হাজার রুপি করে সহায়তা দেয়ার কথা বলেছেন তিনি।
এদিকে নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি ও গুরুতর আহতদের ২ লাখ রুপি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।
আফ/দীপ্ত নিউজ