জুলাই মাস এলেই আক্ষেপে পুড়তে হয় ব্রাজিল ভক্তদের। এই মাসটি যে সেলেসাওদের জন্য সুখকর নয় সেটি প্রমাণিত হল আবারো। কেন যেন জুলাই এলেই ছন্দ হারিয়ে ফেলে এক সময়ে শৈল্পিক ফুটবল খেলা দলটি। কাকতালীয়ভাবে আরেকবার ৭ জুলাই কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালের শেষ ম্যাচে উরুগুয়ের কাছে হেরে ভক্তদের কাঁদিয়ে বিদায় নিয়েছে নেইমারবিহীন ব্রাজিল।
৮ জুলাই, ২০১৪। মারাকানা স্টেডিয়ামে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত স্বাগতিক হিসেবে ‘হট ফেভারিট’ ব্রাজিল। সেমিফাইনালে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ জার্মানি। ম্যাচের আগে সবাই ধরেই নিয়েছে জার্মানদের উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে যাবে ব্রাজিল। তবে কে জানতো, সেই দিন ব্রাজিলের ইতিহাসের অন্যতম বিভীষিকাময় দিন হতে চলেছে।
সেমিফাইনাল শুরুর আগেই ব্রাজিলের আত্মবিশ্বাস ছিল তুঙ্গে। ঘরের মাঠে বিপুল সমর্থন কাজে লাগিয়ে নিশ্চিত করবে বিশ্বকাপের ফাইনাল, এমনটাই ছিল অনুমান। শুরুটাও আক্রমণাত্মক। নেইমার জুনিয়র আর থিয়াগো সিলভার অনুপস্থিতিতে স্বাগতিকরা শুরু করেছিল আক্রমণ দিয়ে।
ম্যাচে জার্মানি প্রথম আক্রমণে ওঠে ১৩ মিনিটে। মার্সেলো বল কেড়ে নিতে গিয়ে পাঠিয়ে দেন গোললাইনের বাইরে। কে জানত, ওই মুহূর্তটাই ব্রাজিলের ফুটবলে ইতিহাস বদলে দিয়েছে পরের ১ দশকের জন্য। জানলে হয়ত মার্সেলো নিজেও বলটা ক্লিয়ার করতে চাইতেন না ওভাবে।
কর্ণার থেকে বল ক্লিয়ারের আশায় কাছের পোস্টে জড়ো হয়ে যান সবাই। দূরের পোস্টে চলে যায় বল। হালকা টাচে বল জালে জড়িয়ে দেন আনমার্কড থমাস মুলার। মিনিট খানেক পর ফার্নান্দিনহোর ভুল। সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্কোরশিটে নাম লেখান মিরস্লাভ ক্লোসা। ব্রাজিলের রোনালদো নাজারিওকে টপকে হয়ে যান বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা।
পরের ৭ মিনিটের মধ্যে জার্মানি আরও ৩ গোল করে। টনি ক্রুসের জোড়া গোল চলে আসে। গ্যালারিতে তখন অজস্র কান্নাভেজা চোখ। টনি ক্রুস, সামি খেদিরা, মেসুত ওজিলরা কোনো সুযোগই দেননি সেদিন। টিম প্লে আর পাসিং ফুটবলটা যেন শিখিয়ে দিচ্ছিলেন ব্রাজিলের ফুটবলারদের। প্রথমার্ধ শেষ হয় ৫ গোলে পিছিয়ে থেকে। ব্রাজিলের হার নিশ্চিত হয়ে যায় তখনই।
এরপরেও বেরসিকের মতো দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোল করে বসেন আন্দ্রে শুরলা। নব্বই মিনিটে অস্কারের করা সেই গোল যেন ব্রাজিলের কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটে হয়ে থাকবে আজীবনের জন্য। ম্যাচ শেষ হয় ৭–১ স্কোরলাইনে। এক দশক পরেও যা ব্রাজিলকে পোড়ায় ব্যাপকভাবে।
আল/ দীপ্ত সংবাদ