শুদ্ধাচার সুশাসনসহ ৫টি ইস্যুতে আজ সচিবদের বৈঠক বসছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। বৈঠকে সরকারের সব বিভাগের সচিবকে উপস্থিত থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে ডাকা সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন সভাপতিত্ব করবেন।
কোনো বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব ছাড়া প্রতিনিধি হিসেবে অন্য কোনো কর্মকর্তা ওই বৈঠকে অংশ নিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই বৈঠকে জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কার নিয়ে আলোচনা হবে।
নতুন সরকার গঠনের পর এটি দ্বিতীয় সচিব সভা। সর্বশেষ গত ৫ই ফেব্রুয়ারি সচিব সভা হয়েছিল। ওই সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন। তখন যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল সেগুলো বাস্তবায়ন পর্যালোচনা হবে আজকের সভায়। সাধারণত সচিব সভায় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকেন।তবে আজকের বৈঠকে তার উপস্থিত থাকার কোনো সূচি নেই।
কয়েক মাসের মাথায় ডাকা আজকের বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বেনজীর আহমেদের মতো দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিষয়ে। ক্ষমতা দেখিয়ে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করা সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ কীভাবে জাতীয় শুদ্ধাচার পুরস্কার পেয়েছিলেন তার পর্যালোচনাও হবে বৈঠকে।
এছাড়া সামনের দিনে বেনজীর আহমেদের মতো কোনো কর্মকর্তা যাতে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত না হন সেদিকে খেয়াল রাখতে নির্দেশনা দেয়া হবে বৈঠক থেকে। এছাড়া বেনজীর আহমেদকে দেয়া পুরস্কারের বিষয়ে করণীয় নিয়েও আলোচনা হতে পারে। সততা ও কর্মনিষ্ঠার জন্য শুদ্ধাচার পুরস্কার পাওয়া বেনজীর আহমেদের নানা অনিয়ম–দুর্নীতির তথ্য প্রকাশের পর তার শুদ্ধাচার পুরস্কারটি ফিরিয়ে নেয়ারও দাবি করছেন কেউ কেউ।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র যখন বেনজীর আহমেদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, এর সাড়ে ছয় মাস পর সরকার তাকে ‘শুদ্ধাচার পুরস্কার’ দেয়। ২০২২ সালে তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করেন। শুদ্ধাচার পুরস্কার গ্রহণের কয়েক মাস পরই অবসরোত্তর ছুটিতে যান বেনজীর আহমেদ। এই পুরস্কার প্রাপ্তির দুই বছরের মাথায় তার অবৈধভাবে অর্জন করা বিপুল সম্পত্তির তথ্য প্রকাশ পায়। এসব তথ্য নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধান শুরু এবং আদালতের মাধ্যমে সম্পদ ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ আসার আগেই সপরিবারে দেশ ছেড়ে যান পুলিশের সাবেক এই আইজি।
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রিসভা ২০১২ সালে ‘সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়: জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল’– চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করেছিল। এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয় ২০১৭ সালে। এরপর থেকে সততার মানদণ্ডে ‘শুদ্ধ’ থাকা সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতিবছর এই পুরস্কার দেয়া হচ্ছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, আজকের বৈঠকে বেনজীর ইস্যুসহ এ সংক্রান্ত বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেয়া হবে। এছাড়া কর্মকর্তাদের শুদ্ধাচার পরিপালনের বিষয়েও নির্দেশনা দেয়া হবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে।
আল / দীপ্ত সংবাদ