টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ফেনী–পরশুরাম সড়কের কয়েকটি স্থান পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১৬ হাজার পরিবার। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র দুই উপজেলায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, বেড়িবাঁধের আগের ১২টি ভাঙন দিয়ে এবং বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়ে দুই উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। ডুবে গেছে ফসলি জমিও।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যে, মুহুরী নদীতে পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি রয়েছে।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা হাবিব জানান, পরশুরাম উপজেলায় বন্যায় আগেই বেড়িবাঁধের ১২ স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছিল। গত কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি এবং ভাঙনের স্থান দিয়ে উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারণে পরশুরাম উপজেলায় পৌরসভা এবং তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৪০ গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া ভূঁইয়া জানান, মুহুরী, সিলোনিয়া, কহুয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ফুলগাজী উপজেলার ফুলগাজী ইউনিয়নের, মুন্সিরহাট ইউনিয়নের, আমজাদহাট ইউনিয়নের ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা চার হাজার।
এদিকে বন্যা দুর্গতদের মাঝে ফেনী–১ আসনে বিএনপি‘র নির্বাচন সমন্বয়ক ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।
ফুলগাজী উপজেলায় মুহুরী, সিলোনিয়া নদীর বাঁধে নতুন করে কোন ফাটল না দেখা দিলেও পূর্বের ফাটল দিয়ে এবং বাঁধ উপচে বন্যার পানি বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করেছে। বর্তমানে ফেনী বিলোনিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি ফুলগাজী এবং পরশুরাম অংশে প্লাবিত হওয়ায় সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, বন্যা পরিস্থিতির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর এই অঞ্চলে এবারসহ তৃতীয় বার বন্যা দেখা দিলো।
আবদুল্লাহ আল–মামুন/এজে/ফেনী