বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে তালিকাভুক্ত জাপানের তোমিকো ইতুকা মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ১১৬ বছর। তিনি গত ২৯ ডিসেম্বর জাপানের হিয়োগো প্রিফেকচারের আশিয়া শহরের একটি নার্সিং হোমে মারা যান। দেশটির সরকারি টেলিভিশন এনএইচকে এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
তোমিকো ইতুকার জন্ম ১৯০৮ সালের ২৩ মে জাপানের বাণিজ্যিক শহর ওসাকায়। তিনি তিন ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ছয় বছর আগে জন্ম নেওয়া তোমিকো নিজের জীবনে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন। ২০ বছর বয়সে বিয়ে করেন তিনি। তার দুই মেয়ে, দুই ছেলে এবং পাঁচজন নাতি–নাতনি রয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তার স্বামীর টেক্সটাইল কারখানার অফিস দেখাশোনা করতেন। ১৯৭৯ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর জাপানের নারা শহরে একা বসবাস শুরু করেন।
তোমিকো দীর্ঘ জীবনকে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে কাটিয়েছেন। তিনি ভালো ভলিবল খেলতেন এবং জাপানের বিখ্যাত মাউন্ট ওন্টেক পাহাড়ে দু’বার আরোহণ করেছিলেন।
২০২৪ সালের আগস্টে স্পেনের মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা ১১৭ বছর বয়সে মারা যাওয়ার পর তোমিকোকে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস স্বীকৃতি দেয়। গত সেপ্টেম্বরে জাপানের জাতীয় প্রবীণ দিবসে তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে আনুষ্ঠানিক সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
আশিয়ার মেয়র রিওসুকে তাকাশিমা এক বিবৃতিতে বলেন, ‘তোমিকো ইতুকা তার দীর্ঘ জীবনে আমাদের আশা ও সাহস জুগিয়েছেন। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।‘
জাপান দীর্ঘজীবী মানুষের দেশ হিসেবে পরিচিত। সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ১০০ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ৯৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যাদের মধ্যে ৮৮ শতাংশই নারী। এটি দেশটির জীবনযাত্রা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অনন্য দৃষ্টান্ত।
বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে বর্তমানে ব্রাজিলিয়ান নান ইনাহ কানাবারো লুকাসকে ধরা হচ্ছে। তার বয়স ১১৬ বছর, যিনি তোমিকো ইতুকার মৃত্যুর ১৬ দিন পর জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
সূত্র: বিবিসি, ডয়চে ভেলে।