নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে উদযাপনের নানান রীতি রয়েছে, যা স্থানীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং বিশ্বাসের প্রতিফলন। তবে কিছু রীতি একেবারেই ব্যতিক্রমী ও অদ্ভুত। গোলাকার ফল খাওয়া থেকে শুরু করে থালা ভাঙা কিংবা সমুদ্রে ফুল ভাসানো—এসব রীতির পেছনে রয়েছে সুখ, সমৃদ্ধি ও সৌভাগ্যের কামনা। আসুন জেনে নেওয়া যাক বিশ্বের নানা দেশে নববর্ষ উদযাপনের কিছু আকর্ষণীয় রীতি:
যুক্তরাষ্ট্র:
যুক্তরাষ্ট্রে নববর্ষের অন্যতম আকর্ষণ নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে বিশাল জনসমাগম। ঠিক রাত ১২টায় আতশবাজি এবং বিখ্যাত ‘বল ড্রপিং‘ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হয়। এছাড়াও ঘরোয়া পার্টি, গান–বাজনা এবং নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদযাপন হয়।
চীন:
চীনে নববর্ষ উদযাপন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের ১ জানুয়ারি নয়, বরং চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পালিত হয়। এটি ‘স্প্রিং ফেস্টিভ্যাল‘ নামে পরিচিত। লাল ফানুস, ড্রাগন ড্যান্স, এবং আতশবাজি চীনা নববর্ষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
জাপান:
জাপানে নববর্ষকে বলা হয় ‘শোগাতসু‘। নতুন বছর শুরু হয় শিন্টো মন্দিরে প্রার্থনা করে এবং ঘর–বাড়ি পরিষ্কার করার মাধ্যমে। এটি আত্মশুদ্ধি ও নতুন সূচনা প্রতীকী করে। বিশেষ খাবার “ওসেচি” পরিবেশনের মাধ্যমে এই দিন উদযাপন করা হয়।
স্পেন:
স্পেনে নববর্ষের রাত ১২টায় ঘড়ির প্রতিটি ঘণ্টাধ্বনির সঙ্গে একটি করে আঙুর খাওয়ার রীতি রয়েছে। এটি সুখ ও সমৃদ্ধির প্রতীক। এই বিশেষ রীতি স্পেনের প্রতিটি পরিবারেই জনপ্রিয়।
ব্রাজিল:
ব্রাজিলে নববর্ষ উদযাপনের কেন্দ্রবিন্দু সমুদ্র সৈকত। সাদা পোশাক পরে আতশবাজি এবং নাচ–গান এখানে সাধারণ চিত্র। সমুদ্রে ফুল ভাসিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সমুদ্র দেবীর কাছে প্রার্থনা করার রীতি প্রচলিত।
ফিলিপাইন:
ফিলিপাইনে গোলাকার জিনিস যেমন ফল বা মুদ্রাকে সৌভাগ্যের প্রতীক বলে মনে করা হয়। নববর্ষে টেবিলে বিভিন্ন গোলাকার ফল সাজানো হয়।
ডেনমার্ক:
ডেনমার্কে পুরোনো থালা ভেঙে প্রতিবেশীদের বাড়ির সামনে ফেলার রীতি প্রচলিত। এটি সম্পর্কের মজবুত বন্ধন ও সৌভাগ্যের প্রতীক।
দক্ষিণ কোরিয়া:
দক্ষিণ কোরিয়ায় নববর্ষে “সোলাল” উৎসব পালিত হয়। পরিবারের সবাই ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে পূর্বপুরুষদের স্মরণ করে। বিশেষ খাবার “টকগুক” খাওয়ার রীতি রয়েছে।
রাশিয়া:
রাশিয়ায় নববর্ষ উদযাপনে বিশেষ করে ‘ডেড মরোজ‘ (সান্তা ক্লজের রাশিয়ান সংস্করণ) এবং তার সঙ্গী ‘স্নেগুরোচকা‘ (স্নো মেইডেন) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বরফঢাকা পরিবেশে আতশবাজি এবং খ্রিস্টমাস ট্রি সাজিয়ে উদযাপন হয়।
স্কটল্যান্ড:
স্কটল্যান্ডে নববর্ষ উদযাপন ‘হগমানে‘ নামে পরিচিত। মশাল জ্বালিয়ে শোভাযাত্রা, গান–বাজনা, এবং ঐতিহ্যবাহী নাচের মাধ্যমে এটি উদযাপন করা হয়।
ভারত:
ভারতে নববর্ষ উদযাপন অঞ্চলভেদে ভিন্ন। উত্তর ভারতে আতশবাজি এবং পার্টির মাধ্যমে উদযাপন হয় এবং দক্ষিণ ভারতে মন্দিরে পূজা এবং ঐতিহ্যবাহী রীতিতে দিনটি পালিত হয়।
অস্ট্রেলিয়া:
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি হারবারে বিশ্বের অন্যতম বড় আতশবাজি প্রদর্শন হয়। সৈকতে পার্টি এবং পিকনিক এখানকার নববর্ষ উদযাপনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
দক্ষিণ আফ্রিকা:
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে নববর্ষ উপলক্ষে রঙিন শোভাযাত্রা বের করা হয়। নাচ, গান, এবং ঐতিহ্যবাহী পোশাক এই উৎসবকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
এমবি/ এসএ