সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল সংক্রান্ত আদালতের রায় প্রত্যাহার ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে টানা ৬ ঘণ্টা অবরোধের পর শাহবাগ ছেড়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল পৌনে ১২টা থেকে টানা ৬ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে শাহবাগ মোড় অবরোধ করার পর সন্ধ্যা ৬টায় বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই আবার যানজট স্বাভাবিক হয়।
এর আগে সকাল থেকেই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে শাহবাগ থেকে সায়েন্সল্যাব, ফার্মগেট, পল্টনমুখী যান চলাচল বন্ধ ছিল।
বৃহত্তর কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামীকাল শুক্রবার অনলাইন এবং অফলাইনে চার দফা দাবির ভিত্তিতে সারা দেশে জনসংযোগ ও সমন্বয় করা হবে।
শনিবার বিকাল ৩টায় সকল বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। এবং আগামী রবিবার সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে ধর্মঘট করবে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেন নাহিদ ইসলাম।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে ২০১৮ সালের পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া উচ্চ আদালতের রায় আপাতত বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। ফলে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আপস নয় বরং সংগ্রামের পথ বেছে নেব।
বৃহস্পতিবার এ নিয়ে তৃতীয় দিনের মতো শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
এর আগে গতকাল বুধবার ও গত মঙ্গলবারও একই দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। তার আগে সোমবার ও একই দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
এদিন সকাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক অতিক্রম করে রাজু ভাস্কর্যের সামনে দিয়ে শাহবাগ এসে জড়ো জয় হাজার হাজার শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল হয়েছে ২০১৮ সালে। আমার ভাইয়েরা রক্ত দিয়ে সেই অধিকার আদায় করেছে। ফের ৬ বছর পর
শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলসহ চারটি দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো;
১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে।
২. ১৮‘ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে।
৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। ৪. দূর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন বানচাল করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।