গ্রামীণফোনে উপ–পরিচালক কাজী হাসান মাহমুদ, তাঁর স্ত্রী ও গৃহপরিচারিকার বিরুদ্ধে পোষা বিড়ালকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনা পর্যালোচনা করে কাজী হাসান মাহমুদ–এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মোবাইল অপারেটর কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেড।
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিকেল ৩টার দিকে গ্রামীণফোন অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গ্রামীণফোন সকল প্রাণীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং মানুষ ও প্রাণীর সহাবস্থানে বিশ্বাস করে। সম্প্রতি আমরা একটি পোষা প্রাণী ও আমাদের একজন কর্মীকে ঘিরে একটি ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়েছি।’
গ্রামীণফোন আরও জানিয়েছে, ‘আমরা যে কোনো প্রাণীর প্রতি বিরূপ আচরণের কঠোর নিন্দা জানাই। ঘটনাটি আমরা দ্রুত পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কাজ করছি।’
জানা গেছে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন গ্রামীণফোন উপ–পরিচালক কাজী হাসান মাহমুদ। সোমবার (১২ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে পাশের ফ্ল্যাটে পরিবারের সঙ্গে থাকা ইলমা নামে এক তরুণীর পোষা বিড়াল কাজী হাসান মাহমুদের বাসায় ঢুকে পড়ে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিড়ালটিকে লোহার রড দিয়ে মারধর করা হয়। যার ফলে পোষা বিড়ালটি রক্তাক্ত হয়।
এ নিয়ে ফেসবুকে কিছু ভিডিও ও ছবি শেয়ার করেন বিড়ালের মালিক ইলমা। সঙ্গে পুরো ঘটনা তুলে ধরেন, যা ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে পড়ে। এরপর থেকে নেটিজেনরা গ্রামীণফোনকে বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
ফেসবুকে বিড়াল নিয়ে লেখালেখির একটি গ্রুপ রয়েছে। যার নাম ক্যাট সোসাইটি অব বাংলাদেশ।
ফেসবুক গ্রুপে বিড়ালের মালিক ইলমা পোস্টে যা লিখেছেন– ‘আজ (সোমবার) দুপুর আনুমানিক ২টা ৩০ মিনিটের দিকে আমার ছোট ভাই স্কুল থেকে ফিরে এসে জানায়, সে একটি বিড়ালের চিৎকার শুনেছে। আমি দৌড়ে শব্দের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখি আমার প্রতিবেশী কাজী হাসান মাহমুদ (ডেপুটি ডিরেক্টর, গ্রামীণফোন) এবং ফারহানা খানম (কর্মকর্তা, অরিস্টো ফার্মা)-এর ফ্ল্যাটের দরজা খোলা।’
‘আমি তাদের ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখি তাদের গৃহকর্মী মজিদা একটি সাদা বিড়ালকে লোহার রড দিয়ে নির্মমভাবে মারছে। আমি গিয়ে বিড়ালটিকে উদ্ধার করি এবং বুঝতে পারি, এটা আমারই বিড়াল। ৫ মাস বয়সী একটি ছোট মেয়ে বিড়াল যাকে আমি কয়েক মাস আগে রাস্তা থেকে উদ্ধার করেছিলাম। সে সবসময় বাসার মধ্যেই থাকে।’
ইলমা আরও লিখেছেন, ‘বিড়ালটি তখন রক্তাক্ত, কাঁপছে, নাক দিয়ে রক্ত ঝরছে, নড়াচড়া করতে পারছিল না। সে মাত্র ১০ মিনিটের জন্য বাইরে গিয়েছিল, আর এ ১০ মিনিটেই তার শরীর থেঁতলে দেওয়া হলো! এই একই পরিবার ৬ মাস আগে আমার আরেকটি বিড়ালকে ৮তলা থেকে ফেলে দিয়েছিল, যার ফলে সে ফুসফুসে আঘাত পায় এবং টানা ৯ মাস চিকিৎসা করিয়েও তাকে বাঁচাতে পারিনি।’
‘আমি আজ শান্তভাবে প্রতিবাদ করতে গেলে তারা আমার সাথে অশোভন আচরণ করে, চিৎকার করে আমাকে বের করে দেয়, গালাগালি করে এবং মামলার হুমকি দেয়। অথচ গৃহকর্মী মজিদা নিজেই স্বীকার করেছেন, তার ম্যাডাম ফারহানা খানম তাকে বিড়াল মারতে বলেছেন। আমার কাছে সিসিটিভি ফুটেজ, ছবি এবং বিড়ালের আর্তনাদের ভিডিও সংরক্ষিত আছে।’
এ নিয়ে থানায় মামলা করবেন বলেও জানিয়েছেন বিড়ালের মালিক ইলমা।
এসএ