বিজয়ের ৫২ বছরের বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে এক অদম্য অগ্রযাত্রার উদাহরণ। বিশ্লেষকদের মতে, গ্রামীণ জনপদে রাস্তাঘাট–সেতু নির্মিত হওয়ায় বদলে যাওয়া ‘গ্রামীণ অর্থনীতি‘ সুফল এনেছে সারা দেশে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল মাধ্যম, নারী শিক্ষা ও টিকাদান কর্মসূচিতে সফলতার সাথে খাদ্য উৎপাদনে এসেছে স্বয়ংসম্পূর্ণতা। টেকসই অবকাঠামো নির্মাণ ও বিনিয়োগ বাড়ানো এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ।
হাজার বছরের শোষিত,পরাধীন বাঙালির প্রথম স্বাধীন–সার্বভৌম রাষ্ট্র ‘বাংলাদেশ‘। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের বুকে ওড়ে লাল–সবুজের বিজয় পতাকা। তবে বাঙালির চলার পথ মসৃণ ছিল না; লড়তে হয়েছে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের সঙ্গে থেকেই। তারপরও শত বাধা অতিক্রম করে স্মার্ট, উন্নত ও সমৃদ্ধির পথ বেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উন্নয়নের সারথি হয়েছে পদ্মা সেতু, কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যু কেন্দ্র, সাগরপাড়ে ট্রেনের ছুটে চলায় কিংবা রাজধানীর মেট্রোরেলে।
সরকার দেশের পরিকল্পিত উন্নয়নের জন্য “ভিশন ২০২১” চালু করে এবং পরবর্তীকালে “ভিশন ২০৪১” বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরিত করার জন্য একটি রোডম্যাপ হিসাবে কাজ করেছে। এই দূরদর্শী পরিকল্পনাগুলি দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পর্কিত লক্ষ্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করে, যা টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথ নির্ধারণ করে।
বিজয় অর্জিত হলেও অর্থনৈতিক ‘মুক্তি‘ ছিল অনেকটাই সুদূর পরাহত। তবে ৫ দশকের স্বাধীন বাংলাদেশ এখন অনেকটাই স্বনির্ভর, উন্নয়ন–অগ্রযাত্রায় অদম্য। আইএমএফের তথ্য মতে, চলতি মূল্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের জিডিপি ৫০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে এবং ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে দেশের অর্থনীতির আকার ছুঁয়েছে ১ ট্রিলিয়ন ডলার।
বিশ্লেষকদের মতে, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ, দেশের ৫০ জেলা রেল সংযোগে আসা, অবকাঠামো উন্নয়নে শহর ও গ্রামের মধ্যে বৈষম্য কমানোসহ বেশকিছু উদ্যোগ গতি এনেছে দেশের অর্থনীতি ও জীবনযাপনে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ কয়েকটি প্রকল্প চালু হচ্ছে মঙ্গলবার
২০০৮–৯ অর্থবছরে দেশে মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ২৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন। ২০২২–২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে ৪ কোটি ৭৭ লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে। ২২টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতি হবে ২৮তম।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ