বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজার মহোৎসব। প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার মর্ত্য থেকে কৈলাস গমনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে। রাজধানীসহ সারাদেশের পূজা মণ্ডপগুলোতে আজ ভক্তদের মধ্যে বিষাদের ছায়া বিরাজ করছে।
হিন্দু শাস্ত্র মতে, দশমীতে দেবী দুর্গার বিদায়ের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে অসুরিক প্রবৃত্তি—কাম, ক্রোধ, হিংসা ও লালসাকে বিসর্জন দিয়ে মানবিক গুণাবলীর বিকাশ ঘটানোর শিক্ষা। ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠার বার্তা নিয়েই অনুষ্ঠিত হয় এই বিদায়–আচার।
ঢাকা মহানগরের মোট ২৫৪টি পূজা মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হবে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও তুরাগ নদীর ১০টি ঘাটে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিসর্জন হবে বিনাস্মৃতি স্নান, ওয়াইস ও নবাববাড়ি ঘাটে। এছাড়া লালকুটি, মিলব্যারাক, পোস্তগোলা শ্মশান, বসিলা ব্রিজ, আমিনবাজার এবং আশুলিয়ার ধউরে ফেরিঘাটেও বিসর্জনের আয়োজন থাকবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর অধিকাংশ প্রতিমা ঢাকেশ্বরী মন্দিরে কড়া নিরাপত্তায় আনা হবে। সেখান থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে প্রতিমা যাবে বিনাস্মৃতি স্নান ঘাটে বিসর্জনের জন্য।
বিজয়া দশমীকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নেয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য বাহিনী মিলিয়ে সাত হাজারেরও বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
শুধু রাজধানীতে বিসর্জন ঘিরে মোতায়েন রয়েছে সাড়ে চার হাজার পুলিশ সদস্য। ঘাটগুলোতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সোয়াট, বোম্ব ডিস্পোজাল টিম ও কে–নাইন ইউনিট। র্যাবের পক্ষ থেকেও থাকছে ৯৪টি টহল ও সাদা পোশাকের সদস্য।
বিসর্জনের সময় নৌ–দুর্ঘটনা রোধে বুড়িগঙ্গা নদীতে টহল দেবে নৌ–পুলিশ ও কোস্টগার্ড। নদীতে ২০টি ট্রলার বোট, ২টি ওয়াটার বাইক ও ২টি স্পিডবোট মোতায়েন করা হয়েছে। কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে ঘাটে মাইকিং, ডুবুরি দল ও মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে বিসর্জন ঘিরে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেনা, পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আনসারসহ সাড়ে তিন লাখ সদস্য মাঠে দায়িত্ব পালন করছেন।