বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আজ ৪৮ বছরে পদার্পণ করেছে। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর স্বাধীনতার ঘোষক ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করাই দলের মূল লক্ষ্য ছিল।
জিয়াউর রহমান প্রথমে ১৯৭৭ সালের ৩০ এপ্রিল তার শাসনকে বেসামরিক রূপ দেয়ার জন্য ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। পরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রেক্ষাপটে তিনি জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) গঠন করেন। এর সমন্বয়ক ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার।
১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায় ঢাকার রমনা রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে জিয়াউর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রথমে ১৮ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন, পরে সেটি বিস্তৃত হয়ে ৭৬ সদস্যে রূপ নেয়। এ সময় জাগদল বিলুপ্ত হয়ে বিএনপির সঙ্গে একীভূত হয়। অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী প্রথম মহাসচিব হন। শুরু থেকেই তরুণদের অংশগ্রহণ বিএনপিকে বিশেষভাবে আলাদা করে তোলে। দলের প্রায় ৪৫ শতাংশ সদস্য ছিলেন তরুণ ও রাজনীতিতে একেবারে নতুন।
বিএনপির ৪৭ বছরের পথচলা আদর্শ, সংগ্রাম ও গণতন্ত্রের অঙ্গীকারে নির্মিত। জিয়াউর রহমানের শহীদ হওয়ার পর বেগম খালেদা জিয়া দলকে নেতৃত্ব দেন এবং গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার এরশাদকে পতনের মুখে ঠেলে দেন। ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সংসদীয় গণতন্ত্র চালু করে। দলটি এরপর আরও কয়েক দফা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেছে।
বর্তমানে বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারেক রহমান। তিনি দলকে সংগঠিত করা, তরুণদের সম্পৃক্ত করা এবং নতুন রাজনৈতিক রূপরেখা দেওয়ার মাধ্যমে বিএনপিকে নতুন ধারায় এগিয়ে নিচ্ছেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি
৪৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপি সাত দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—
৩১ আগস্ট: রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে প্রতিষ্ঠার তাৎপর্য বিষয়ক আলোচনা সভা।
১ সেপ্টেম্বর: সকাল ৬টায় কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশে পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১টায় বনানীতে শহীদ জিয়ার মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন, জেলা ও মহানগরে আলোচনা সভা ও র্যালি।
২ সেপ্টেম্বর: কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বর্ণাঢ্য র্যালি।
৩ সেপ্টেম্বর: উপজেলা ও পৌরসভায় আলোচনা সভা ও র্যালি।
অন্যান্য কর্মসূচি: পোস্টার ও বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ, সমসাময়িক ইস্যুতে গোলটেবিল বৈঠক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বৃক্ষরোপণ, মৎস্য অবমুক্তকরণ, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।