শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪

বাড়ছে-কমছে তিস্তার পানি, ভাঙনের কবলে ফসলি জমি

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা উঠানামা করছে। নদী সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকায় ভাঙনে ফসলি জমিতে পানি ও বাড়িঘর ভাঙনের মুখে পড়েছে।

শুক্রবার (৩০ জুন) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ১৭ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার (স্বাভাবিক ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। সকাল ৯টায় পানি কমে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টায় আর কমে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন ধরে তিস্তার পানি বিপদসীমার অনেক নিচে ছিল। গতকাল রাত থেকে পানি বাড়তে শুরু করলে সকাল ৬টায় তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে। আবার সকাল ৯টা ও দুপুর ১২টায় পানি কমে বিপৎসীমার নিচে নেমে আসে।

এদিকে পানি বাড়ার কারনে তিস্তা নদীর উজানে বেড়েছে ভাঙন৷ নদী পেটে চলে গেছে ফসলি জমি, ভিটা বাড়ি। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ছোটখাতা মুন্সিপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীর ডান তীরে জ্যামিতিক হারে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙছে বুনো ক্ষেতসহ অন্যান্য ফসলি জমি, বিলিন হয়ে যাচ্ছে ভিটেমাটি। আর হুমকির মুখে পড়েছে শতাধিক বাড়িঘর, মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

ছোটখাতা গ্রামের ওমর আলী বলেন, ‘প্রায় ৭ বছরে তিন বার ভাঙ্গতে হয়েছে ভিটা বাড়ি। প্রথম ভিটা কেনা হলেও পরে ঘর বাঁধতে হয়েছে অন্যের জমিতে। এবারও নদী ঘরের কাছে চলে এসেছে। দুই একদিনের মধ্যে এখান থেকে বাড়িঘর ভেঙে চলে যেতে হবে। কিন্তু কোথায় নতুন করে ঘর উঠাবো, সেরকম তো জায়গা পাচ্ছি না। আমার তো সামর্থ্যও নাই জমি কেনার।

একই গ্রামের নুর আলম বলেন, ‘এবারের বর্ষায় উজান থেকে আসা পানিতে যে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে তাতে প্রায় ১০ থেকে ১২ একর আবাদী জমি বিলিন হয়ে গেছে।

ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে তিস্তা নদীর পানি ওঠানামা করায় বিস্তীর্ণ এলাকার নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। যেকোনো সময় পানি বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ি, খগাখড়িবাড়ি, খালিশাচাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের ১৫ চরগ্রামের মানুষ।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারনে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ছোটখাতা এলাকার উজানেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা সেখানে পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। অনুমতি পেলে আমরা ভাঙন এলাকায় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে জিও ব্যাগসহ অনান্য সামগ্রী প্রস্তুত রয়েছে। যদি খুব ভাঙন দেখা দেয় আমরা প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

তিনি আরও বলেন, এখন যেহেতু বর্ষাকাল তিস্তা নদীর পানি সামনে আরও বাড়তে পারে। পানি বাড়বে এরকম পূর্বাভাস রয়েছে আমরা এ বিষয়ে সতর্ক আছি।

 

ইয়াছিন মোহাম্মদ সিথুন/ইমাম/দীপ্ত নিউজ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More