বাগেরহাটের সাবেক সুপার আবুল হাসনাত খানকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাগেরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক মতিউর রহমান তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
এদিন ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে আদালতে আনা হয়। এর আগে গত শুক্রবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে রংপুর থেকে বাগেরহাটের সাবেক এসপি আবুল হাসনাত খানকে আটক করে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশ।
পরে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) জেলার ফকিরহাট থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় এজাহারনামীয় আসামী হিসেবে আবুল হাসনাত খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই মামলায় পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করে। মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম মিঠু পুলিশ সুপার আবুল হাসনাতের বিরুদ্ধে, বিভিন্ন সময় উস্কানিমূলক বক্তব্য ও হুকুম দিয়ে সরকারকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন দমানোর চেষ্টার অভিযোগ করেছেন।
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খান ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে “একটি ব্যালট, একটি ব্যুলেট” বক্তব্য এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের কয়েকদিন আগে মৎস্য অধিদপ্তরের একটি অনুষ্ঠানে “যেখানে উন্নয়ন, সেখানেই ধ্বংস” এমন বক্তব্য দিয়ে ব্যাপক সমালোচনার স্বীকার হন এই পুলিশ সুপার। তার বক্তব্যগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়। গেল বছরের ২৪ আগস্ট পর্যন্ত বাগেরহাটের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাগেরহাট জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌশলী (পিপি) মাহবুব মোরশেদ লালন বলেন, সাবেক তিন সংসদ সদস্য, সাবেক পুলিশ সুপারসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। এই মামলায় পুলিশ সুপারকে আদালতে সোপর্দ করলে, আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় বাগেরহাট–১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট–২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, বাগেরহাটের সাবেক পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খানসহ আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতাকর্মীকে আসামী করা হয়েছে। এ মামলার অন্যান্য আসামীরা হচ্ছেন, বাগেরহাট–২ আসনের আরেক সাবেক সদস্য সংসদ সদস্য মীর শওকত আলী বাদশা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ কামরুজ্জামান টুকু, সাধারণ সম্পাদক ভুইয়া হেমায়েত উদ্দিন, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান, বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা সরদার নাসির উদ্দিন, শেখ হেলাল উদ্দিনের একান্ত সচিব ফিরোজুল ইসলাম জোমাদ্দার, ফকিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন কুমার দাস, আ,লীগ নেতা আবুল কালাম আজাদ ওরফে সাহেব মল্লিক, ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা ওয়াহিদুর রহমান বাবু, আ,লীগ নেতা ইমরুল হাসান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মিনা হাসিবুল হাসান শিপন, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি রেজাউর রহমান মন্টু, সাধারণ সম্পাদক খান আবু বক্কর সিদ্দিক, পৌর আওয়ামালীগের সভাপতি শেখ বসিরুল ইসলাম, অওয়ামীলীগ নেতা শামীম আহসান, মহিতুর রহমান পল্টন, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর জায়েসী আশরাফী জেমস, বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাহিয়ান সুলতান ওশান, কচুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বাবু, সাবেক চেয়ারম্যান নাজমা সারোয়ার, আ,লীগ নেতা লিয়াকত হোসেন লিটন।
এসব আসামীদের বিরুদ্ধে ছাত্র জনতার ন্যায্য আন্দোলনকে নস্যাৎ করার উদ্দেশ্যে আসামীরা গেল ৪ আগস্ট দুপুরে ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি গোলচত্ত্বর এলাকায় জড়ো হয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস করা, ছাত্র জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া, আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ এবং হত্যার উদ্দেশ্যে একাধিকগুলি ছোড়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামুন/আল