আগামীকাল রবিবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ। বাংলা বর্ষপঞ্জিতে যুক্ত হবে নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
জীর্ণ পুরাতন সবকিছু ভেসে যাক, ‘মুছে যাক গ্লানি’ এভাবে বিদায়ী সূর্যের কাছে এ আহ্বান জানায় বাঙালি। পহেলা বৈশাখ আমাদের সকল সঙ্কীর্ণতা, কুপমণ্ডকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন–ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মনের ভিতরের সকল ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যোমে বাঁচার অনুপ্রেরণা যোগায়। আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পহেলা বৈশাখের বর্ষবরণে আমাদের মধ্যে এই স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়।
এদিকে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানাতে এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়েছে রমনার বটমূল।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) রমনায় সরেজমিনে দেখা যায়, ছায়ানটের একঝাঁক শিল্পি ব্যস্ত গানের রিহার্সাল করতে। র্যাব এবং পুলিশের সদস্যরা ব্যস্ত সময় পার করছেন শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর মহড়া চলছে বটমূল প্রাঙ্গণে।
সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে পুরো রমনা পার্কসহ আশপাশের এলাকাগুলো। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও ব্যস্ত সময় পার করছেন আগামীকাল যেন জনসাধারণ নির্বিঘ্নে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পারেন।
রমনার বটমূল প্রাঙ্গনের সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন শেষে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে আয়োজিত উৎসবে নিরাপত্তার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
বর্ষবরণ ঘিরে হামলার শঙ্কা নেই জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, পহেলা বৈশাখের উৎসব বাঙালি সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ, কিন্তু সেই আয়োজনে অতীতে হামলা হয়েছে। তাই নিরাপত্তার জন্য আমরা শতভাগ প্রস্তুত রয়েছি। তবে সন্ধ্যার আগে সব অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে হবে।
জানা গেছে, পহেলা বৈশাখের প্রভাতে রমনার বটমূলে থাকবে ছায়ানটের ৩০টি পরিবেশনা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আঁধার রজনী পোহালো’ অথবা ‘তোমার সুর শুনায়ে’র মতো জনপ্রিয় গানের সঙ্গে তারা রেখেছেন অতুলপ্রসাদের ‘ওরে বন, তোর বিজনে সঙ্গোপনে’র মতো দাদরা তালের গান। এ সবই একক সংগীত।
কাজী নজরুল ইসলামের ‘নম নম নম বাংলাদেশ মম’ আর ‘আনো আনো অমৃত বারি’র পাশাপাশি থাকবে নিশিকান্ত রায় চৌধুরীর ‘অধরা দিল ধরা এ ধুলার ধরণিতে’।