আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সকল ভাষা এবং ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আগরতলা প্রেস ক্লাবে আরশিকথা বহুমাত্রিক সংবাদ মাধ্যম ও একেবি টিভির যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলায় জেগে রই‘ শীর্ষক একটি ভিন্ন মাত্রার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই সব ভাষার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে মাতৃভাষা বাংলার প্রচার এবং প্রসারে ঐক্যবদ্ধ হন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক তথা একুশে পদক প্রাপ্ত কবি মিনার মনসুর মহাশয়কে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। উত্তরীয় পরিয়ে তাঁর হাতে বিশেষ সম্মাননা স্মারক ও উপহার তুলে দেন ভারতের স্বনামধন্য হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অসীম কুমার দে।
এছাড়াও এই পর্বে মঞ্চে আলোকিত ব্যক্তিত্বদের মধ্যে উপস্থিত আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ, ত্রিপুরা সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী, সংবাদ ব্যক্তিত্ব শাণিত দেবরায়, শিক্ষাবিদ ড. মোস্তাফা কামাল এবং সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অমিত ভৌমিককে আরশিকথার পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। অতিথিরা প্রত্যেকেই নিজ নিজ বক্তব্যে বাংলা ভাষার ইতিহাস টেনে এর প্রসারের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এদিন দ্বিতীয় পর্বে নানা শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা “বাংলা ভাষার উল্লেখযোগ্য ইতিহাস ও প্রসারের গুরুত্ব” নিয়ে একটি স্বল্প বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এই পর্বে বিচারকদের আসন অলংকৃত করেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক ড. আশিস কুমার বৈদ্য, শিক্ষাবিদ ড. দেবব্রত দেবরায়, কবি ও লেখিকা স্বপ্না ভট্টাচার্য এবং ডাঃ অসীম কুমার দে। এদিন বিচারকদের রায়ে এই প্রতিযোগিতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান লাভ করে যথাক্রমে ত্রিপুরা গভঃ ল কলেজের শিক্ষার্থী ফারদিন পোদ্দার, ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রোভেল হোসেন এবং শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর বিদ্যামন্দিরের শিক্ষার্থী ত্রম্বকেন্দু চক্রবর্তী। এছাড়াও বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় কৃতি সম্মানে ভূষিত হন হলিক্রস স্কুলের শিক্ষার্থী সুকাইলা রাহী, এমবিবি কলেজের শিক্ষার্থী অভিজিৎ দেব, ইগনৌ এর শিক্ষার্থী রাহুল বিশ্বাস এবং এমবিবি কলেজের শিক্ষার্থী প্রশান্ত বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে বাংলা ভাষাকে এগিয়ে রাখার লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য ইতিহাস, ব্যক্তিত্ব, সাহিত্য, শিল্প, সংস্কৃতি, ঘটনাবলী প্রভৃতি বিষয়ের উপর নির্ভর উপস্থিত সকলের জন্য উন্মুক্ত একটি অনবদ্য ক্যুইজ প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ মাতৃভাষা বাংলাকে মর্যাদা প্রদানে সার্বিক ভাবে সার্থক রূপ নেয়। ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন আরশিকথার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শান্তনু শর্মা। প্রতিযোগিতায় আরশিকথার পক্ষে রাজা নাগ ও সপ্তর্ষী লস্কর এবং অন্নপূর্ণা জুয়েলারি, এসভিএস গ্লোবাল ডট ইন ও সোনিক হেলথ এন্ড রিসার্চ সেন্টারের পক্ষ থেকে ৩৫জন সঠিক উত্তরদাতাদের স্মারক সম্মান ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে সুরের আলো, কাব্যায়ন, সুফিয়ানা সহ একক পরিবেশনায় অমিত চৌধুরী, মানালী গাঙ্গুলী, শুভঙ্কর চক্রবর্তী ও সুপ্রিয়া চক্রবর্তী সবাইকে মুগ্ধ করেন। গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন তস্মিতা ঘোষ।
সকল ভাষাকে সম্মান জানিয়ে মাতৃভাষা বাংলা ভাষার প্রসার ও প্রচারের লক্ষ্যে আরশিকথা ও একেবি টিভির এই উদ্যোগকে সফল করে তোলার জন্য আয়োজক কমিটির পক্ষে শিক্ষাবিদ শঙ্কর সাহা ও রীণা দাস সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
আল / দীপ্ত সংবাদ