৪৫তম সরকারি উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ) ঋণ প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশকে ৩৯ হাজার ৯০২ মিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ২৪৮.৮৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ঋণ সহায়তা দেবে জাপান।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলানগরের এনইসি–২ কনফারেন্স রুমে বাংলাদেশ সরকার এবং জাপান সরকারের মধ্যে ‘এক্সচেঞ্জ অব নোট’ এবং ‘ঋণ চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী বাংলাদেশের পক্ষে ‘এক্সচেঞ্জ অব নোট’ এবং ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। জাপানের পক্ষে ‘নোট বিনিময়’ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এবং ঋণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন জাইকা বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহিদে।
অনুষ্ঠানে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, ‘এই চুক্তি জাপান ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের আরও একটি মাইলফলক। এটি বাংলাদেশের উন্নয়নে জাপানের দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।‘
তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে এটি জাপানের প্রথম চুক্তি, যা নতুন সরকারের সঙ্গে উন্নয়নমূলক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করবে।‘
ইআরডির প্রেস বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, যমুনা রেলওয়ে ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প (তৃতীয় কিস্তি) : চলমান প্রকল্পের মোট খরচ ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা (বাংলাদেশ সরকার ৪ হাজার ৬৩১ দশমিক ৭৬ কোটি টাকা এবং জাইকা ১২ হাজার ১৪৯ দশমিক ২০ কোটি টাকা)। প্রকল্পের বাস্তবায়ন সময়কাল জুলাই ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত। এই প্রকল্পের জন্য জাপান ইতিমধ্যেই ১ লাখ ২৮ হাজার ৬৯৭ মিলিয়ন জাপানি ইয়েন দিয়েছে।
তৃতীয় কিস্তির আওতায় জাপান ৩৮ হাজার ২০৬ মিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ২৩৭ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলার / প্রায় ২ হাজার ৯৪৬ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা) দেবে।
এই কিস্তির সুদের হার ১ দশমিক ৭০ শতাংশ নির্মাণের জন্য, শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশ পরামর্শক সেবার জন্য এবং এককালীন ফ্রন্ট অ্যান্ড ফি শূন্য দশমিক ২ শতাংশ থাকবে। ঋণ শোধের সময়কাল ৩০ বছর, যার মধ্যে ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ড থাকবে।
ইআরডি জানিয়েছে, চট্টগ্রাম পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প (প্রকৌশল সেবা): পয়ঃনিষ্কাশন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, পাম্পিং স্টেশন এবং পাইপলাইন ইত্যাদির মতো পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা উন্নয়নের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীতে একটি উপযুক্ত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা (ক্যাচমেন্ট ২ ও ৪) উন্নীত করা এবং জীবনযাত্রার মান ও স্যানিটারি অবস্থার উন্নতি এবং জলজ পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
প্রকল্পের মোট খরচ ৫ হাজার ১৫২ দশমিক ৫৬ কোটি টাকা (বাংলাদেশ সরকার ৫৮১ দশমিক ৫৭ কোটি টাকা, জাইকা ৪ হাজার ১৪৪ দশমিক ২৮ কোটি টাকা, সিডব্লিউএএসএ ৩৯ কোটি টাকা)।
প্রকল্পটির বাস্তবায়ন সময়কাল জানুয়ারি ২০২৫ থেকে ডিসেম্বর ২০৩২ পর্যন্ত।
জাপান সরকার বিভিন্ন পর্যায়ে এ প্রকল্পের জন্য ঋণ দেবে। এই ইঞ্জিনিয়ারিং সেবা ঋণের জন্য জাপান সরকার ১ হাজার ৬৯৬ মিলিয়ন জাপানি ইয়েন (প্রায় ১১ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলার/ প্রায় ১৩০ দশমিক ৮০ কোটি টাকা) দেবে। এই ঋণের সুদের হার শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ, ফ্রন্ট অ্যান্ড ফি (একবার) শূন্য দশমিক ২ শতাংশ এবং পরিশোধের সময়সীমা হবে ৩০ বছর যার মধ্যে ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডও রয়েছে।