ফেসবুকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান চন্দ্র রায় পোদ্দারের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পোস্ট দেওয়ার প্রায় চার মাস পর কুড়িগ্রাম, রাজারহাট উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
শনিবার (১৭ মে) রাতে কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকের নাম মনিবুল হক বসুনিয়া। তিনি কুড়িগ্রাম, রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের আবুল কাশেম সরকারি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমার রায় চৌধুরী স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মহাপরিচালকের পত্র মোতাবেক শিক্ষক মনিবুল হক বসুনিয়া তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য পোস্ট করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের পোস্ট করায় সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। এতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা–২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্করণ) এর ৭ ও ১০ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি হওয়ায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত করে ওই শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ফেসবুক পোস্ট বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মনিবুল ইসলাম বসুনিয়া বলেন, ‘আড়াই–তিন মাস পূর্বে চট্টগ্রামে প্রাথমিক শিক্ষকদের একটা প্রোগ্রামে শিক্ষকরা দশম গ্রেডের দাবি করায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষকদের হেয়প্রতিপন্ন করে বলেছিলেন—না পোষালে চাকরি ছেড়ে চলে যান। এর প্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষকরা তাদের ভাষায় প্রতিবাদ করেছে, আমি আমার ভাষায় প্রতিবাদ করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, উপদেষ্টা সাহেব আপনি যদি শিক্ষকদের অবমাননা করেন, তাহলে আপনিও নিজের পেশায় ফিরে যান। আপনি ডাক্তার, আপনি চিকিৎসা পেশায় ফিরে যান। আজ চার মাস পর এই পোস্টের জন্য আমাকে বরখাস্ত করা হলো, বিষয়টি বোধগম্য নয়।’
শিক্ষক মনিবুল বলেন, ‘আমি ২০১৫ সাল থেকে শিক্ষকদের অধিকার নিয়ে লিখছি। এমনকি আওয়ামী লীগের সভাপতির বিরুদ্ধেও লিখেছি, কিন্তু তখন এমন কিছু হয়নি। জুলাই আন্দোলনের পর ভেবেছিলাম মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এসেছে। কিন্তু এখন আবার কণ্ঠরোধ শুরু হলো।’
এসএ