বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১৪, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১৪, ২০২৪

ফের চালু হচ্ছে ফেনীর ছাগলনাইয়া-শ্রীনগর সীমান্ত হাট

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

দীর্ঘ তিন বছর বন্ধ থাকার পর মঙ্গলবার (৯ মে) ফের চালু হচ্ছে ফেনীর ছাগলনাইয়াশ্রীনগর (ভারত) সীমান্ত হাট।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) বিকালে বাংলাদেশভারতের সংশ্লিষ্ট জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এটি চালু হলে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

সভায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন ফেনী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) অভিষেক দাশ। এতে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহকারী কমিশনার সুলতানা নাসরিন কান্তা, ছাগলনাইয়া ইউএনও মৌমিতা দাস, ছাগলনাইয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফখরুল ইসলাম, বর্ডার হাটের সাধারণ সম্পাদক রাধানগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন, ছাগলনাইয়া থানার ওসি সুদীপ রায় পলাশ, বিজিবির ছাগলনাইয়া কোম্পানি কমান্ডার মো. ওমর ফারুক প্রমুখ। ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার এডিএম অসীম সাহা, এছাড়া বর্ডার হাটের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, উভয় দেশের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।

হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি সূত্র জানায়, মহামারি করোনার কারণে ২০২০ সালের মার্চে হাটটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় দুই দেশের ব্যবস্থাপনা কমিটি। এ হাটটি ব্যবসার জন্য যেমন চাঙা ছিল, তেমনি পণ্য বেচাকেনার পাশাপাশি দুই বাংলার মিলনমেলা বসতো। হাটকে কেন্দ্র করে ভারতবাংলাদেশ সীমান্ত এলাকার দরিদ্র মানুষ গড়ে তুলছিলেন জীবনজীবিকা। তবে পুনরায় হাটটি চালুর খবরে খুশি হাটের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা।

দুই দেশের নোম্যাসল্যান্ডে আবার বসবে মিলনমেলা। দীর্ঘদিন বেকার থাকার পর আবার কাজে ফেরার অপেক্ষায় আছেন এই হাঁটটির দোকান মালিক ও কর্মচারীরা। সীমান্ত হাটকে ঘিরে আবারও নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের কথা ভাবছেন স্থানীয়রাও।

দু’দেশের সীমান্ত বাসীদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ানো ও বাণিজ্য প্রসারে বাংলাদেশের ফেনী জেলার ছাগলনাইয়ার মধুগ্রাম ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের শ্রীনগর সীমান্তে ২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি চালু হয় দেশের তৃতীয় সীমান্ত হাট। দু’দেশের আশপাশের পাঁচ কিলোমিটারে বসবাসরত গ্রামবাসীদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সপ্তাহের একদিন বেচাকেনা হতো এই হাটে। এ হাটটিতে ভারতবাংলাদেশিদের জন্য আলাদা আলাদা শেডে ২৭টি করে দোকান রয়েছে।

পাঁচ বছর বেশ ভাল ভাবেই চলছিলো হাঁটের কার্যক্রম। পৃথিবীব্যাপী করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর ২০২০ সালে মার্চের ৩ তারিখ বন্ধ হয়ে যায় হাঁটটি। প্রায় তিন বছর পর আবার চালু হওয়ার অপেক্ষা এখন। দুই দেশে অবস্থানরত আত্মীয়স্বজনদের দেখা করতে লাগতো না পাসপোর্ট ভিসা। সেই মেলবন্ধন আবার তৈরী হওয়ার কথা ভেবে হাঁটের পাশবর্তী দুই দেশের স্থানীয়দের মধ্যেও বিরাজ করছে উচ্ছাস।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা বেকার হয়ে পড়েছিলো। আবার যদি চালু হয় তাহলে তারা কর্ম সংস্থান ফিরে পাবে। হাটটি চালু হলে সুদিন ফেরার আশা করছেন স্থানীয়রাও।

ভবানী দাস নামের নারী দোকানী বলেন, অনেক কষ্টে লোন করে হাটে একটি দোকান দিয়েছিলাম। ভালোই চলছিলো হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পথে বসতে হয়েছে। ঠিকমতো চলতেও পারছিনা। লোনের জন্য মানবেতর জীবন যাপন করছি। হাট চালু হলে অবস্থার পরিবর্তন হবে।

স্থানীয় সুয়া শাহ ফকির মাজারের খাদেম জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাটের দিন এখানে অনেক মানুষ আসতো তারা এটা ওটা কিনতো। এই হাটকে ঘিরে ভালোই ছিলাম। প্রতি হাটে কিছু টাকা আয় হতো। তা দিয়ে ভালোই চলতো। হাটটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে আয় কমেছে। এখন আমরা ভাল নেই।

ফেনী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) অভিষেক দাশ জানান, বর্ডার হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় আগামী ৯ এপ্রিল থেকে পূর্বের নিয়মকানুন অনুযায়ী প্রত্যেক সপ্তাহের মঙ্গলবার বর্ডার হাট খোলার সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ অংশে প্রতি সপ্তাহের সোমবার অর্থাৎ হাটের পূ্র্বের দিন ছাগলনাইয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে টিকিট বিক্রি করা হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত, চোরাচালান প্রতিরোধ ও আগত ক্রেতা বিক্রেতাদের হয়রানি বন্ধে কঠোর নজরদারি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।

যূথী/দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More