লামিন ইয়ামাল। বয়স মাত্র ১৬ বছর ৩৪০ দিন। অল্প বয়সেই ইউরোর সব আলো কেড়ে নিয়েছেন স্প্যানিশ এই ক্ষুদে তারকা।
নিজের প্রথম ম্যাচেই ফুটবল ভক্তদের বুঝিয়ে দিয়েছেন ফুটবলে জ্বলে উঠার মশাল তিনি। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ানশিপে বিগ ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে নিজের জানান দেন ইয়ামাল।
বিশ্বমঞ্চে ফরাসিদের বিপক্ষে তার চোখ ধাঁধানো গোল করে বুঝিয়েছেন ফুটবলটা শাসন করতে এসেছেন।
অনেক ফুটবল বিশ্লেষক মনে করেছিলো ইয়ামালের এখনো ম্যাচুরিটি হয়নি। তাদেরকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করলেন এই ক্ষুদে তারকা।
জন্ম ১৩ জুলাই ২০০৭ সালে স্পেনের মাটারা প্রদেশে শরণার্থী পরিবারে। বাবার বাড়ি মরক্কোর একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মা আফ্রিকার ছোট্ট দেশ নিরক্ষীয় গিনির। জীবনের নানা চড়াই–উতরাই পেরিয়ে আজকের এই জায়গাতে এসেছেন ইয়ামাল। জীবনের প্রতিটি লগ্নেই মোকাবেলা করেছেন নানা রকম প্রতিকূলতা হাজারও রক্ত চক্ষুকে জলাঞ্জলি ফিরে এসেছেন স্পেনের জাতীয় দলে।
২০১৪ সালে বার্সেলোনায় ইয়ালামের পরিবার স্থায়ীভাবে থাকতে শুরু করে। এরপর মাত্র ৭ বছর বয়সে ভর্তি করানো হয় বার্সার ফুটবল একাডেমিতে। সেখানেই বদলে যায় ইয়ামালের জীবন। এগিয়ে যেতে থাকেন রূপকথার সেই দিগন্তের দিকে।
স্বপ্ন দেখতে থাকেন নিজের জীবনের আইডল মেসির মতো বার্সার প্রাণ–ভোমরা হবেন। ধীরে ধীরে সেই স্বপ্নও বুনতে শুরু করেন ইয়ামাল।
বর্তমানে স্পেনের জাতীয় দলের ভরসার অন্যতম প্রতীক হয়ে উঠেছেন। নিজের নামের সুবিচার খুব ভালোভাবেই করছেন ইয়ামাল। ইতোমধ্যেই নিজের রূপ দেখিয়েছেন স্প্যানিশ এই তারকা।
বার্সার মূল একাদশে খেলে জাভি হার্নান্দেজের আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন তিনি। বার্সার পাশাপাশি স্পেনের অনূর্ধ্ব ১৫, ১৬, ১৭, ১৯ সব দলের হয়ে খেলেছেন ১৬ বছর বয়সী উইঙ্গার।
এরপর ২০২২ সালে স্পেনের কিংবদন্তি ফুটবলার ও তৎকালীন বার্সার কোচ জাভি হার্নান্দেজের চোখে পড়েন এই ক্ষুদে ফুটবলার। এরপর সাবেক বার্সা কোচ তাকে সিনিয়র দলে অনুশীলনের সুযোগ করে দেয়। ইয়ামাল নিজের ফুটবল ক্যারিয়ারের প্রথমে একজন পজিটিভ স্ট্রাইকার ছিলেন। কিন্তু বর্তমানে তিনি রাইট উইঙ্গার হিসাবে খেলছেন।
মাত্র ১৫ বছর ৯ মাস ১৬ দিন বয়সে বার্সার জার্সি গায়ে অভিষেক হয় এই ক্ষুদে ফুটবলারের। নিজের নামের পাশে যুক্ত করেন এক অনন্য কীর্তি। ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে সিনিয়র দলে খেলার নজির গড়েন তিনি। বাবা মরক্কোর হওয়ায় এবং নিজে স্পেনের নাগরিক হওয়ায় লামিন ইয়ামাল চাইলে দুই দেশের হয়েই প্রতিনিধিত্ব করতে পারতেন। এছাড়াও ইকুয়েটরিয়াল গিনির হয়েও খেলতে পারতেন তিনি।
তবে লামিন ইয়ামালের অপ্রতিরোধ্যভাবে ছুটে চলা সত্যিই অভাক করেছে ফুটবল ফ্যানদের। হয়তো ফুটবল বিশ্ব নতুন কোন সুপারস্টার দেখার প্রহর গুনছে।
ইমরান হাসান/এজে/দীপ্ত সংবাদ