ধর্মভিত্তিক সংগঠনসহ বিভিন্ন মহলের আপত্তির মুখে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে সৃষ্ট সংগীত ও শরীরচর্চা শিক্ষক পদ বাতিল করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সোমবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয় অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আকতার খান এ তথ্য জানান।
একই সঙ্গে ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা–২০২৫’ এ কিছু শব্দগত সংশোধন আনা হয়েছে। গত আগস্টে জারি করা বিধিমালায় পরিবর্তন এনে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রণালয়।
মাসুদ আকতার খান বলেন, রোববার বিধিমালাটি সংশোধনের গেজেট প্রকাশ হয়েছে। গত আগস্টে জারি করা বিধিমালায় ৪টি ক্যাটাগরির পদ থাকলেও সংশোধিত বিধিমালায় রাখা হয়েছে মাত্র ২টি। সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ক সহকারী শিক্ষকের পদ দুটি নতুন বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত নয়।
বিতর্কের কারণে পদগুলো বাদ দেয়া হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে কোনো মন্তব্য না করে তিনি বলেন, আপনারা এটি খতিয়ে দেখতে পারেন।
অতিরিক্ত সচিব আরও জানান, বিধিমালায় একটি শব্দগত পরিবর্তন আনা হয়েছে। তার ভাষায়, আগের বিধিমালায় মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া পদগুলোর মধ্যে ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ের স্নাতক ডিগ্রিধারীদের জন্য এবং বাকি ৮০ শতাংশ অন্যান্য বিষয়ের স্নাতক ডিগ্রিধারীদের জন্য বলা ছিল। এতে একটি শব্দগত ভুল হয়েছিল, যেন মনে হচ্ছিল বিজ্ঞান ছাড়া অন্য বিষয়ে ডিগ্রিধারীরাই ৮০ শতাংশ পদে নিয়োগ পাবেন। কিন্তু বাস্তবে ৮০ শতাংশ ছিল সাধারণ (কমন) পদ, যেখানে বিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রিধারীরা সমানভাবে নিয়োগ পেতে পারেন।”
তিনি আরও বলেন, তাই বিধিমালার কোটার বাইরের ৮০ শতাংশ পদের ক্ষেত্রে ‘অন্যান্য বিষয়ে’ শব্দবন্ধের জায়গায় ‘বিজ্ঞানসহ অন্যান্য বিষয়ে অন্যূন’ শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়েছে।
গত ২৮ আগস্ট প্রকাশিত নতুন নিয়োগ বিধিমালায় সংগীত ও শরীরচর্চা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক পদ প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে এর পরপরই ধর্মীয় সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে মন্ত্রণালয়।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম প্রাথমিকে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়ে সংগীত শিক্ষক পদ সৃষ্টির তীব্র সমালোচনা করেন।
সেদিনই এক সেমিনারে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারাও একই বিষয়ে কড়া সমালোচনা করেন।
এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর হেফাজতে ইসলাম সংগীত শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগকে ‘ইসলামবিরোধী অ্যাজেন্ডা’ আখ্যা দিয়ে বিধিমালা বাতিলের দাবি তোলে।