বছরের পর বছর গাছের ডাল আর ময়লা–আবর্জনায় ভরে থাকা নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক বর্তমানে ঝলমল পরিচ্ছন্ন এক সৌন্দর্য্যে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। বর্তমানে প্রধান সড়ক দিয়ে যাতায়াতের সময় কিংবা উপজেলায় প্রবেশের সময় যে কেউ প্রধান ফটকের এমন সৌন্দর্য্য এক মিনিট দাঁড়িয়ে এক পলক দেখার পরই প্রস্থান করবেন। বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরিচ্ছন্ন রুচিবোধের কারণেই এমনটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
পূর্বে প্রধান ফটকের দুই পাশে লাগানো কৃষ্ণচূড়ার গাছ দীর্ঘসময় ধরে পরিস্কার না করার কারণে গাছের ডাল দিয়ে প্রায় সময় ঢেকে থাকতো গেইটের অধিকাংশ অংশ। এছাড়া গেইট সংলগ্ন ফাঁকা স্থানগুলোও ছিলো ছোট ছোট ময়লার ডাস্টবিন। যার কারণে অনেকেই সেই স্থানগুলো অধিকাংশ সময় উন্মুক্ত গণশৌচাগার হিসেবেও ব্যবহার করতো। উপজেলার প্রবেশ মুখটি সব সময় অপরিস্কার থাকার কারণে বোঝার উপায় ছিলো না যে এটি একটি গুরুত্বপূর্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটক।
বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যোগদানের পর থেকেই উদ্যোগ গ্রহণ করেন উপজেলা পরিষদকে পরিস্কার–পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে নতুন করে সাজানোর কর্মকান্ড। যার ফলে বর্তমানে পুরো উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনেই ফিরে এসেছে ছিমছাম মনোরম একটি সুন্দর পরিবেশ। রঙ্গিন রং–এ প্রধান ফটকের সৌন্দর্য্য এখন সবারই মন কাড়ছে। রাতের বেলায় হরেক রকমের রঙ্গিন আলোর ঝলকানিতে আরো আকর্ষনীয় করে তোলে প্রধান ফটকের ঝকঝকের চেহারাকে। এমন সুন্দর ছিমছাম পরিবেশ অন্য মানুষদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখবে বলে মনে করছেন নওগাঁর সচেতন মহল।
বর্তমানে উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই বাম দিকে চোখে পড়বে রং করা গ্রিলে ঘেরা স্থানে লাগানো বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ আর তার উপরেই গ্রিলের সঙ্গে হরেক রকমের রং দিয়ে স্টিলের ফ্রেমে লেখা উপজেলা পরিষদ উপজেলা প্রশাসন নওগাঁ সদর যা দেখে যে কোন মানুষই সহজেই বুঝতে পারবেন যে তিনি সদর উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন কিংবা ফটক দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করছেন। আর ডান দিকে গ্রিলে যুক্ত করা হয়েছে আধুনিক সরকারি লোগোসহ একাধিক লোগো।
এমন চমৎকার উদ্যোগ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম রবীন শীষ বলেন সুন্দর পরিবেশ ঈমানের একটি অঙ্গ। তাই একটি বড় সুন্দর বাড়ির প্রবেশ মুখটিই যদি নোংরা আর্বজনা দিয়ে ভরে থাকে তাহলে সেই বাড়ির ভিতরটা কত সুন্দর হতে পারে তা সহজেই যে কেউ বুঝে নিবেন। তাই শুধুমাত্র সেবা ভালো দিলেই হবে না সেই সেবা প্রদানের স্থানটিও মনোরম হওয়া জরুরী। একটি সুন্দর পরিবেশ যে কোন মানুষের কর্মস্পৃহাকে যেমন বাড়িয়ে দেয় তেমনি ভাবে আমি যে স্থানে দিনের বেশির ভাগ সময় অতিবাহিত করবো সেই পরিবেশটি যদি সুন্দর ও মনোরম না হয় তাহলে সেই পরিবেশটি নিশ্চয় অন্যদের মাঝেও ভালো লাগার জন্ম দিবে না। তাই এমন রুচিবোধ থেকেই অবহেলায় অপরিস্কার পড়ে থাকা উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে পুরো উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনকেই সবার সহযোগিতা নিয়ে সাধ্যমতো নতুন করে একটি ছিমছাম মনোরম পরিবেশে ফিরে আনার চেস্টা করছিমাত্র।
তিনি আরো বলেন আমরা যে যেখানে কাজ করি সেই স্থানটুকু যদি নিজেদের সাধ্যমতো সাজিয়ে–গুছিয়ে নিয়ে সুন্দর রাখার চেস্টা করি তাহলে আমরা সবাই একটি মনোরম সুন্দর পরিবেশে থেকে সবাইকে হাসিমাখা সুন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে সেবা প্রদান করতে পারি। এতে করে সেবা গ্রহিতার কাছে সেবা প্রদানকারী ব্যক্তি সম্পর্কেও একটি পরিচ্ছন্ন ধারণার জন্ম হবে। তাই এই উপজেলার এমন পরিবেশকে ধরে রাখতে পরিষদ প্রাঙ্গনের ভিতরের, বাহিরের ও স্থানীয়সহ সবারই অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রয়েছে। আমি আশাবাদি পুরো উপজেলা পরিষদের এমন পরিবেশের ধারাবাহিকতা রক্ষার্থে আগামীতেও পরিষদ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিসহ সবাই যে যার জায়গা থেকে নিজেদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখবেন।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ