পানি আইনের অধীনে প্রথম বারের মত দেশের চারটি এলাকাকে পানি সংকটাপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। গতকাল রবিবার পানি সম্পদ পরিষদের নির্বাহী কমিটির ১৮তম সভায় এই তথ্য জানানো হয়। সভায় হাওর সুরক্ষা আদেশ এর খসড়াও চূড়ান্ত করা হয়।
ঢাকার গ্রীন রোডের ওয়ারপো ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত উক্ত সভায় পানির প্রাপ্যতা যাচাই করতে নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচরে সমীক্ষা চালানোর সুপারিশ করা হয়। একই সাথে দেশের ৫০ জেলাতে যে ভূগর্ভস্থ পানির প্রাপ্যতা যাচাইয়ে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তা অবশিষ্ট ১৪টি জেলাতেও শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সভায়।
সভায় জানানো হয়, পানি আইন, ২০১৩ এর ধারা ১৭ ও ১৯ এর আলোকে বিস্তারিত জরিপ ও অনুসন্ধান চালানো হয়েছে। জরিপ অনুযায়ী দেশের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ জেলার ৪৭টি ইউনিয়নকে উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার ৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা কে অতি উচ্চ পানি সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
চিহ্নিত এলাকা সমূহে পানি আইন অনুযায়ী পানির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এছাড়াও খাবার পানি ও গৃহস্থালি কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে।
নির্বাহী কমিটির এই সভায় আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর ও হাকালুকি হাওর এর জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের লক্ষ্যে ‘হাওর প্রতিবেশ সুরক্ষা আদেশ’ জারির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বাংলাদেশ পানি আইন এর ক্ষমতাবলে প্রথমবারের মতো এ আদেশ জারির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই সুরক্ষা আদেশের অধীনে হাওর দু’টিতে পর্যটন নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি কৃষি, মৎস্য ও বনায়ন খাতে করনীয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
সভায় পানি আইন, ২০১৩ এর দুর্বল কার্যকারিতার ওপর আলোকপাত করে আইনটির প্রয়োজনীয় সংশোধনের সিদ্ধান্ত ও গৃহীত হয়।
নির্বাহী কমিটির সভাপতি পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এছাড়াও, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোকাব্বির হোসেনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব/সচিবরা ও অন্যান্য সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।