আমাদের দেশে বহুকাল ধরেই প্রচলন আছে পান্তা ভাত খাওয়ার। রাতে খাবারের পর রয়ে যাওয়া অতিরিক্ত ভাত পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখলেই হয়ে যায় পান্তা।
গ্রামাঞ্চলে গ্রীষ্মকালে সকালের খাবার হিসেবে পান্তা ভাত খাওয়ার চল রয়েছে আমাদের দেশে। তবে শহুরে জীবনে পান্তা ভাতের স্থান নেই বললেই চলে। যদিও শখের বশে পহেলা বৈশাখে পান্তা ভাত খাওয়া হয়ে থাকে। পান্তা–ইলিশ ছাড়া নববর্ষের সকালটা যেন জমেই ওঠে না।
তবে আপনি যদি পান্তা ভাতের উপকারিতা সম্পর্কে জানেন তাহলে আর এটি থেকে দূরে থাকতে চাইবেন না। আসুন জেনে নিই পান্তা ভাতের উপকারিতা–
১.পান্তা ভাতের পুষ্টি
পান্তা ভাত মাইক্রোফ্লোরা সমৃদ্ধ, যা একটি প্রিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে থাকে। এটি অন্ত্রের সংক্রমণ রোধ, শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ভালো হজমশক্তি, ত্বকের উজ্জ্বলতা এবং সুন্দর চুলের জন্য কাজ করে। পান্তা ভাত একটি ইলেক্ট্রোলাইট হিসাবেও কাজ করে থাকে। তাই এটি ক্লান্তি, দুর্বলতা এবং ডিহাইড্রেশন নিরাময় করে।
২. অন্ত্রের প্রদাহ কমায়
পান্তা ভাত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ–বিরোধী বৈশিষ্ট্যে ভরপুর যা আপনার পেট ঠাণ্ডা করে, প্রদাহ কমায়, ফোলাভাব এবং অ্যাসিডিটি প্রতিরোধ করে।
৩. ভিটামিনের উৎস
শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিনের উপস্থিতি রয়েছে পান্তা ভাতে। এটি ভিটামিন বি–৬ এবং ভিটামিন বি–১২ এর ভালো উৎস। আর এ দুই ভিটামিনই আমাদের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য।
৪. শরীর সতেজ রাখে
গরমে ঘামের কারণে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় অনেক উপাদান বেরিয়ে যায়। সেই অভাব মেটানো জরুরি। নয়তো নিস্তেজ হয়ে পড়ার ভয় থাকে। গরমে শরীরকে ভেতর থেকে ঠাণ্ডা ও সতেজ রাখতে কাজ করে পান্তা ভাত। এটি শরীরে পানির অভাব মেটানোর পাশাপাশি তাপমাত্রার ভারসাম্য রাখতেও কাজ করে।
৫. পেটের পীড়া দূর করে
নিয়মিত পান্তা ভাত খেলে তা পেটের নানা সমস্যা দূর করতে কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে শরীরকে সজীব করে তোলে। হজম ভালো হয় যে কারণে আরও অনেক অসুখ থেকে দূরে থাকা সহজ হয়।
৬. শক্তি যোগায়
সারাদিন কাজের জন্য আপনাকে শক্তি দেবে পান্তা ভাত। এটি খেলে শরীর হালকা লাগে এবং কাজের ক্ষেত্রে শক্তি বেশি পাওয়া যায়। এটি গাঁজানো বা ফারমেন্টেড খাবার। আমাদের শরীরের জন্য উপকারী অনেক ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায় এই ভাতে।
৭. হজমে সহায়তা করে
পান্তা ভাত খেলে তা আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, যা আরও ভালো পুষ্টি শোষণ, হজম এবং বিপাক উন্নত করে।
উল্লেখ্য, আর মাত্র দুদিন পর সোমবার (১৪ এপ্রিল) উদযাপিত হবে পয়লা বৈশাখ ও বাংলা নববর্ষ–১৪৩২।
এসএ