রবিবার, অক্টোবর ১২, ২০২৫
রবিবার, অক্টোবর ১২, ২০২৫

পরোয়ানাভুক্ত ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে অবশ্যই আদালতে আনতে হবে: চিফ প্রসিকিউটর

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর যে ১৫ জন সেনা কর্মকর্তা এখন সেনাবাহিনী হেফাজতে রয়েছেন, তাঁদের অবশ্যই আদালতে আনতে হবে।

রবিবার (১২ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে গুমের মামলায় সামরিক কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

১৫ জন সেনা কর্মকর্তা যে সেনাবাহিনী হেফাজতে আছেন, তাঁদের স্ট্যাটাস কী হবে? তাঁরা কি এখন গ্রেপ্তার?’- এ প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আইন সবসময় আইনের গতিতেই চলবে। যখন আদালত থেকে কোনো গ্রেপ্তারি বা অন্য কোনো পরোয়ানা জারি হবে, তখন একজন আসামিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের সামনে উপস্থিত করতে হবে।

এটা সংবিধান, ট্রাইব্যুনাল ও ফৌজদারি কার্যবিধিতেও রয়েছে। অর্থাৎ একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলে, যেখানেই গ্রেপ্তার করা হোক না কেন, তাকে আদালতে আনার সময়ে যতটুকু সময় ব্যয় হবে, তা ছাড়া ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতের সামনে উপস্থিত করতে হবে। শুধু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন নয়, সংবিধানও স্বীকৃতি দিয়েছে যে গ্রেপ্তার করে ২৪ ঘণ্টার বেশি কাউকে আটক রাখা যায় না। এটাই হচ্ছে আইনের বিধান।’

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, পুলিশসহ বিভিন্ন ডিসিপ্লিনারি ফোর্সের (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী) বিচারের জন্যই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন১৯৭৩ বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এ আইনে যেসব অপরাধের বিচার করা হচ্ছে, সেসবের বর্ণনা বাংলাদেশের সাধারণ কোনো আইনে নেই। এমনকি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী বা বিমানবাহিনীর নিজস্ব আইনেও নেই। এটি একটি বিশেষ আইন। এই অপরাধগুলো আন্তর্জাতিক আইনে বর্ণিত অপরাধ। সুতরাং এসব অপরাধের বিচার কেবল এই আইনের আওতায় করতে হবে।

সেনাসদর সংবাদ সম্মেলন করলেও বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাইব্যুনালকে জানানো হয়নিজানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে যেহেতু আনুষ্ঠানিকভাবে ডকুমেন্টারি পদ্ধতিতে কেউ বলেননি যে আটক রাখা হয়েছে, মিডিয়াতে যেটা এসেছে, আমরা সেটা আমলে নিচ্ছি না। যেহেতু আমরা জানি না, তাই এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করব না। আমাদের যদি বলা হয় যে আটক রাখা হয়েছে, তাহলে আইন অনুযায়ী তাঁকে অবশ্যই আদালতের কাছে আনতে হবে।’

এর আগে শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে সামরিক বাহিনী সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি নিয়ে বক্তব্য দেন মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান।

তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, চার্জশিটে নাম আসা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জনকে হেফাজতে নেয়া হয়েছে। তবে সেনাবাহিনী কাছে এখনো গুমের ওয়ারেন্টের কোনো কপি পৌঁছায়নি।

তিনি আরও বলেন, সাবেক ও বর্তমান মিলে মোট ২৫ জন কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে এলপিআরে থাকা একজন ও সার্ভিসে থাকা ১৫ জনসহ মোট ১৬ জনকে সেনা সদরে সংযুক্ত হতে বলা হয়েছিল। ৯ অক্টোবরের মধ্যে সেনা সদরে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়। এর মধ্যে মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ছাড়া বাকি ১৫ জন হাজির হয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধ অভিযোগে সাবেক ও বর্তমান ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গত বুধবার (৮ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনাল এই নির্দেশ দেন। আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

 

এসএ

আরও পড়ুন

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More