মুন্সীগঞ্জে জেলা জাতীয় পার্টির নতুন কমিটি ও পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীদের মধ্যে মারামারি ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের তিনজন আহত হয়।
সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে শহরের মাঠপাড়া এলাকায় অবস্থিত জেলা কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও টঙ্গীবাড়ি উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী, ও মিলন শেখ। পদবঞ্চিত পক্ষের জেলা জাতীয় পার্টির সহ–সভাপতি আওলাদ হোসেন, সাবেক সদস্য জহিরুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার দুপুরে মুন্সীগঞ্জ মাঠপাড়া এলাকার জাতীয় পার্টির জেলা কার্যালয়ে নতুন কমিটির পরিচিতি ও আলোচনা সভা চলছিল। সে সভায় জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি জয়নাল আবেদিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকউল্লাহ সেলিমসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। সে সময় নবগঠিত কমিটির পদ বঞ্চিত মুন্সীগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সহ–সভাপতি আওলাদ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদ হাবিবুর রহমান সেলিম, শ্রম ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নাঈম, সিরাজদিখান উপজেলার সাবেক সাধারন সম্পাদক তাজুল ইসলাম, টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সাবেক সভাপতি হাকিম খান, গজারিয়া উপজেলার সাবেক সাধারন সম্পাদক শামীম ফরাজী, শহর জাতীয় পার্টির সভাপতি আরিফুজ্জামান দিদর প্রবেশ করেন।
পদবঞ্চিত হওয়ায় তারা কার্যালয়ে প্রবেশ করে হট্টগোল শুরু করে। পরে দুপক্ষ মুখোমুখী অবস্থান নিয়ে হাতাহাতি শুরু করে। একপক্ষ–আরেক পক্ষের উপর চেয়ার ছুড়ে মারে। পরে পদবঞ্চিত পক্ষ টেবিল ভাঙচুর, ব্যানার ছিড়ে ফেলে। এ সময় দুপক্ষের কয়েকজন আহত হন।
এ বিষয়ে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক রফিকউল্লাহ সেলিম জানান, আমাদের শান্তিপূর্ণ পরিচিতি সভা চলছিল। সে সময় আরিফুজ্জামান দিদারের নেতৃত্বে জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সহ–সভাপতি আওলাদ হোসেনসহ একটি দল কার্যালয়ে প্রবেশ করে গালিগালাজ–হট্টগোল শুরু করে। আমার গলাচেপে ধরে। আমরা তাদের বাঁধা দিলে চেয়ার–টেবিল ভাংচুর করে। এতে করে আমাদের কয়েকজন আহত হয়।
তবে অভিযোগ অস্বাীকার করেন শহর জাপার সভাপতি আরিফুজ্জামান দিদার। তিনি বলেন,
বর্তমানে জয়নাল আবেদিন নামে যাকে জেলার সভাপতি করা হয়েছে তিনি কখনো জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এমনকি তিনি মুন্সিগঞ্জের বাসিন্দা না। তিনি নারায়ণগঞ্জে থাকেন। সেখানে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল্লাহ সেলিমও জাতীয় পার্টি করতেন না। এ দুজন টাকার বিনিময়ে পদ–পদবী বাগিয়ে এনেছেন। তারা পদ–পদবী এনে ত্যাগী নেতা–কর্মীদের বাদ দিয়ে মনগড়া নতুন কমিটি করেছে। আমরা তার প্রতিবাদ করতে কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। এজন্য তারা আমাদেরকে গালিগালাজ করে। আমাদের কার্যালয় থেকে বের করে দিতে চায়। আমরা তার প্রতিবাদ করলে তারাই আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। আমাদের ৩–৪ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
গত ১৭ আগস্ট জয়নাল আবেদীনকে সভাপতি ও রফিক উল্লাহ সেলিমকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে আরিফুজ্জামান দিদারসহ বেশ কয়েকজন পদ বঞ্চিত হয়।
এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ