প্রচন্ড গরমে হাঁসফাঁস খাচ্ছে নোয়াখালীর ৯ টি উপজেলার মানুষ, অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এরই মধ্যে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে লোডশেডিং। গ্রাম–গঞ্জে দিনে রাতে ৪ থেকে ৫ ঘন্টার বা কখনও তারও কম বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন গ্রাহকরা এমন অভিযোগ অনেকের।
কিছুক্ষণ পর পর লোডশেডিং এর ফলে নষ্ট হচ্ছে বিদ্যুৎ চালিত জিনিস–পত্র, বিদ্যুৎচালিত কল কারখানার যান্ত্রপাতি–মেশিন। হাসপাতালেও বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগির সংখ্যা। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে ঘন–ঘন লোডশেডিং এর কারণে দিনে রাতে বিদ্যুতের চাহিদা একই রকম হয়ে গেছে। তবে গ্রাহকদের চাহিদার তুলনায় অর্ধেক সরবরাহ পাওয়ায় লোডশেডিং অনেক বেড়েছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, জেলার পৌর এলাকাগুলোর প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহককে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। সে হিসেবে জেলায় পিডিবির ৭০ হাজার গ্রাহকের জন্য দিনে এবং রাতে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৩০ মেগাওয়াট। কিন্তু চাহিদা পরিমাণ বা অর্ধেকেরও কম সরবরাহ পাওয়ায় দিনে রাতে মিলে প্রায় ১২–১৩ ঘন্টার বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। প্রতি আধা থেকে এক ঘন্টা পর–পর হচ্ছে এক থেকে দুই ঘন্টার লোডশেডিং। ভয়াবহ অবস্থা পল্লী বিদ্যুতের, দিনে রাতে মিলে ৫ ঘন্টা বা তারও কম বিদ্যুৎ পাচ্ছেন গ্রাহকরা।
মাইজদী হাসপাতাল সড়কে বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত মাহবুবুর রহমান নামের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘হাসপাতালে বিদ্যুতের প্রয়োজনটা সবচেয়ে বেশি। সিটিস্ক্যান, এক্সরে, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি সহ বিভিন্ন মেশিন বিদ্যুৎ দিয়ে চালাতে হয়। সিটিস্ক্যান মেশিন বিদ্যুৎ ছাড়া চালানো সম্ভব না। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাসপাতালে রোগিদের ভিড় থাকে, কিন্তু বিদ্যুতের অতিমাত্রায় লোডশেডিং এর কারণে রোগিদের পরীক্ষা নিরিক্ষাগুলো সময় মতো করা যাচ্ছে না।‘
পিডিবি নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আমিন বলেন, ‘পিডিবিতে আমাদের ৭০হাজার গ্রাহকের প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৩০ মেগা ওয়াট। কিন্তু এ চাহিদার বিপরীতে আমরা প্রতিদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছি মাত্র ১০ থেকে ১২ মেগা ওয়াট, যা চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম। অতিরিক্ত লোডশেডিং এর কারণে দিনে রাতে বিদ্যুতের চাহিদা সমান হয়ে গেছে। বিশেষ করে গরমে গ্রাহকদের চাহিদা কয়েকগুন বেড়ে যায়।‘
পল্লী বিদ্যুৎ নোয়াখালীর জেনারেল ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘জেলায় পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে ৭লাখ ৩২ হাজার প্রায়। বিদ্যুতের চাহিদা দিনের বেলায় ১৮০ মেগাওয়াট যার বিপরীতে সরবরাহ পাওয়া যায় মাত্র ৯০ মেগা ওয়াট। রাতে ১৪০ মেগাওয়াটের বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ মেগাওয়াট। আমরা চাহিদার ৫০ভাগের মতো সরবরাহ পাওয়ায় লোডশেডিং বেড়েছে কয়েকগুন। গ্রামে লোডশেডিংয়ের মাত্রা তুলনা মূলক বেশি, সরবরাহ পাওয়ার ভিত্তিতে গ্রাহকদের লাইন বুঝে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে।‘
এ.এস.এম.নাসিম/আফ/দীপ্ত নিউজ