বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

মমতাজের বছরে আয় অর্ধ কোটি

দীপ্ত নিউজ ডেস্ক
10 minutes read

 

গত পাঁচ বছরে মানিকগঞ্জ২ আসনের সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের সম্পদ ও আয় দুটোই বেড়েছে। তবে বাড়েনি নগদ টাকার পরিমাণ। কমেছে ঋণ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামায় তার আয়ব্যয় সংক্রন্ত তথ্য বিরবণী বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

মানিকগঞ্জের সিংগাইর ও হরিরামপুর উপজেলা এবং সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ২ আসন। এই আসনে থেকে মমতাজ বেগম টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তিনি ছাড়াও এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন আটজন। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় এবার কঠিন পরীক্ষায় মুখে তিনি।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মমতাজ বেগমের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামার তথ্য বিবরণী বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে মমতাজ বেগমের নগদ অর্থের পরিমাণ না বাড়লেও বেড়েছে আয় ও সম্পদের পরিমাণ। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামার তথ্য অনুযায়ীতার বাৎসরিক আয় ছিল ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার ২৭৬ টাকা। বর্তমানে তার আয় দেখানো হয়েছে ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৮ টাকা।

অন্যদিকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামার তথ্য অনুযায়ীমমতজ বেগমের আয় ছিল ৭৯ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৪ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাতে ৭০ হাজার, ব্যবসা থেকে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫৩ টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে ৩০ লাখ, তার পেশা থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার আর অন্যান্য থেকে ৩৪ লাখ ৪১ হাজার ৮৮১ টাকা আয় দেখিয়ে ছিলেন মমতাজ। তবে সে সময় বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট অথবা দোকান বা অন্যান্য এই খাতে কোনো আয়ই ছিল না মমতাজ বেগমের।

বর্তমানে বিভিন্ন খাত থেকে মমতাজ বেগমের বার্ষিক আয় ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৮ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ৩ লাখ টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট অথবা দোকান ভাড়া থেকে ১০ লাখ ৮২ হাজার ৯৯৭ টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৫১ টাকা, পেশা থেকে ৭ লাখ টাকা, সংসদ সদস্য ভাতা ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও আনুষঙ্গিক পারিতোষিক বাবদ ১৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা আয় করেন তিনি।

অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে মমতাজ বেগমের হাতে আছে নগদ ৫ লাখ টাকা, তার স্বামীর নামেও নগদ অর্থ আছে ৫ লাখ টাকা। আর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামাও তার নগদ টাকা ছিল ৫ লাখ আর তার স্বামী ডা. মঈন হাসানের নামে ছিল ২ লাখ। কিন্তু ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে নিজের নগদ অর্থ ছিল ২ লাখ ২০ হাজার টাকা আর স্বামীর নামে কোনো টাকাই ছিল না।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমা অর্থের পরিমাণ ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ২১৮ টাকা। স্বামীর নামে ১৮ লাখ। যা ২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় ছিল ৮৬ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৭ টাকা এবং ২০১৪ সালের হলফনামায় ছিল ৩০ লাখ টাকা এবং স্বামীর নামে ছিল ২০ লাখ টাকা। মধু উজালা কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ৩ কোটি ৫০ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার আছে তার। সঞ্চয়পত্র আছে ৪৫ লাখ টাকার।

মমতাজ বেগমের নামে গাড়ি আছে তিনটি। ল্যান্ডক্রুজার নামে একটি গাড়ির দাম ১ কোটি ৩ লাখ ১২ হাজর ৫০০ টাকা। এ ছাড়া ল্যান্ডক্রুজার ভি৮ মডেলের গাড়ির দাম ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ২৮ লাখ টাকা মূল্যের টয়োটা হাইয়েস আছে। আর স্বামীর ৮ লাখ টাকা মূল্যের একটি ১৩০০ সিসি ফান কার্গো গাড়ি রয়েছে। আর ২০১৪ সালের হলফনামায় তার স্বামীর নামে কোনো গাড়ি দেখাননি তিনি। নির্ভরশীলদের নামে মধু উজালা কোল্ড স্টোরেজের শেয়ার আছে ৬৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার।

কৃষি জমি না বাড়লেও ৫ বছরে মমতাজের ৭০০ শতাংশ অকৃষি জমি কমেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে হলফনামা অনুযায়ী তার অকৃষি জমি ছিল ১২০০ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫০০ শতাংশে। আর ২০১৪ সালের হলফনামা অনুযায়ী অকৃষি জামির পরিমাণ ছিল ৫ কাটা, যার মূল্য ছিল ৫ কোটি টাকা। মহাখালীতে ৫ তলা বিশিষ্টি একটি বাড়ি রয়েছে তার যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা আর সিংগাইরের জয়মন্টপ এলাকায় ২ তলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি আছে মমতাজের। যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৫৭ লাখ ৫ হাজার ৪৪০ টাকা। অন্যদিকে ২০১৪ সালের হলফনামা অনুযায়ী তার নিজ নামে কোনো বাড়ির তথ্য ছিল না। তবে নিজ নামে একটি কোল্ড স্টোরেজ ছিল, যার মূল্য ছিল ৯০ লাখ টাকা।

হলফনামায় নিজের পরিচয়ে মৃত বাবার নাম উল্লেখ থাকলেও মমতাজের স্বামীর নামে নগদ ৫ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ১৮ লাখ টাকা এবং ১৩০০ সিসি ফান কার্গো নামে একটি গাড়ি দেখানো হয়েছে। গাড়িটির মূল্য ৮ লাখ টাকা।

৫ বছরে প্রায় ৫২ লাখ ৫৩ হাজার টাকার ঋণের পরিমাণ কমেছে মমতাজের। ২০১৮ সালে মমতাজের ব্যাংক ঋণ ছিল ৩ কোটি ৩৪ লাখ ১১ হাজার ৪৬৪ টাকা। ২০২৩ সালের হলফনামায় ব্যাংক ঋণ দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। আর ২০১৪ সালের হলফনামায় ব্যক্তিগত ঋণ দেখিয়ে ছিলেন ৪০ লাখ টাকা। ভারতের বহরমপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে এবং কলকাতার হাইকোর্টে মমতাজের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলা চলমান আছে।

মমতাজ বেগম এবারের হলফনামায় তার স্বর্ণের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৫০ তোলা, যার মূল্য ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ২০১৮ ও ২০১৪ সালের হলফনামায় স্বার্ণের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৩৫ ভরি, যার মূল্য দেখানো হয়েছিল ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ২ আসনে যাচাইবাছাই শেষে ১৪ জন প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমসহ ৭ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা রেহেনা আকতার।

মানিকগঞ্জের তিনটি আসনে ২১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। তবে মনোনয়নপত্রে ত্রুটি আর ঋণ খেলাপির কারণে ১২ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায় যাচাইবাছাইয়ে।

 

জাহিদুল/ আল/ দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More