আন্দোলনে ব্যর্থতা, নির্বাচনে না আসায় বিএনপিকে অনেকদিন খেসারত দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ফেনীর দাগনভূঞা বাজারের জিরো পয়েন্টে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব এ কথা বলেন তিনি।
কাদের বলেন, সামনে উপজেলা নির্বাচন সবাই নিজেরা ঐক্যবদ্ধতা থাকবেন। এ নির্বাচনে কোন মার্কা নেই। যার যার নিজের মার্কা, আমরা কাউকে নৌকা দিচ্ছি না। কাজেই বুঝে শুনে ইলেকশনে যাবেন। আমরা কাউকে দল থেকে মনোনয়ন দিচ্ছি না। এ ব্যাপারে সবকিছু ওপেন। ওপেন হলে নির্বাচনটা কেমন হয়েছে অভিজ্ঞতাটাও আমাদের লাগবে। প্রধানমন্ত্রী সে অভিজ্ঞতা নিতে চান। স্বতন্ত্র দিয়ে জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে, এতে নির্বাচনের শুদ্ধতার সংকট হয়নি। সমালোচনা যারা করে তারা করবে, দেশেও করবে বিদেশিও করবে। ক্ষমতা যারা পায়নি তারা আন্দোলনে সফল হতে পারেনি। নির্বাচনে আসতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা এখন অচিরেই টের পাবে তারা রাজনীতিতে নিজেদের এদের কতটা সংকুচিত করেছে। আন্দোলনে ব্যর্থতা নির্বাচনে না আসা জন্য বিএনপিকে অনেকদিন খেসারত দিতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমার কাছে অবাক লাগে মির্জা ফখরুল জেল থেকে বের হয়ে তিনি জনগণের কাছে অসুস্থতার অজুহাতে যাননি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল আসবে তখন হাতে লাঠি একটা নিয়ে মির্জা ফখরুল তাদের কাছে নালিশ করতে গিয়েছে। নালিশ করা তাদের রাজনীতি পুরনো অভ্যাস। নালিশ তারা করবে জনগণের কাছে, জনগণের কাছে করার চাইতে বিদেশীদের কাছে নালিশ করতে তারা স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।রাজনীতিতে তারা গলাবাজি করবে। এর জবাব তো আমাদের দিতে হবে। রাজনীতিকে রাজনীতিতে রূপান্তর চলছে।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, তারা নালিশ করবে আমরা চুপচাপ থাকবো এমন তো হতে পারে না। আজ সারা দুনিয়া এখন তথ্য প্রবাহের। এখন কোন সত্যই কেউ লুকিয়ে রাখতে পারে না। বিএনপির ৪০–৫০ হাজার নেতাকর্মী জেলে আছে এ উদ্ভট দাবি। এ দাবী করার পর হঠাৎ করে দেখলাম মুক্তি পেল কয়েকজন। ৪০ হাজার ৫০ হাজার থেকে তাদের কয়টি বন্দি ৪০ হাজার থেকে নেমে এসেছে ৪ হাজার এসেছে। তার মানে ৪০ হাজার কিন্তু জেলে থেকে। প্রতি মাসে কারা কর্তৃপক্ষের মধ্যমে ৪০ হাজার জেলে যায় তারা যেভাবে দাবি করলো তারা চোর, ডাকাত, ছিনতাইকারী যে ৪০ হাজার এরা মিলে যে চল্লিশ হাজার এরা কি বিএনপির লোক?
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ১৮ বছর একজন মন্ত্রী থাকে এর নজির খুঁজে পাবেন না। এই সৌভাগ্য আমি অর্জন করেছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা আমার উপর আস্থা রেখেছেন, আমার কাজে সন্তুষ্ট ছিলেন। সে কারণে আমার সরকারিভাবে উত্থান, দলীয়ভাবে অবস্থানগত উত্থান। আমি সত্য কথা বলছি কাল শবেবরাত গেছে। আমি ৭৫ পরবর্তীকালে শেখ হাসিনার চেয়ে ভালো মানুষ আমার চোখে পড়েনি।
আরও পড়ুন: বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে সরকার বাধা দেবে না: ওবায়দুল কাদের
এত ভালো মানুষ রাজনীতির আছে এজন্য এ সরকার এত দিন টিকে আছে। তিনি মানুষকে ভালবাসেন মানুষও তাকে ভালবাসে। সেটারই মেলবন্ধন শেখ হাসিনা করেছেন। আজকে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘস্থানে নারী প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদা অধিষ্ঠিত। আওয়ামী লীগের বিয়াল্লিশ বছর আর এটার নদীর নেই সভাপতি। মন্ত্রিত্ব এখানে ১৯৯৬ থেকে পাঁচ বছর, ২১ বছর তিনি প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের। নতুন এ পাঁচ বছরে যেসব কাজ এখনো সম্পূর্ণ হবে। যেমন ঢাকা–চট্টগ্রাম আগের ডিজাইনটি পরিবর্তন করা দরকার এবং এখানে দুদিকে দুটি সার্ভিস লেন করা শুরুতেই জরুরী ছিল। এখন ট্র্যাফিক জ্যাম হচ্ছে।
আমরা প্রোগ্রাম নিয়েছি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ঢাকা–চট্টগ্রাম আপাতত সিক্স লেন করব। পরবর্তীতে এটার আরো এক্সটেনশনের প্রয়োজন হবে। তাও না পারলেও এলিভেটেড আকারে এক্সটেনশনের কথা ভবিষ্যতে ভাবতে হতে পারে। এখানে আপনারা ভর দুপুর বেলায় একত্রিত হয়েছেন দাগনভূঞা আমি আসা–যাওয়ার পথে এরকম আপনাদের সমাবেশ এটা আমি বারবার দেখেছি আজকে আজকে আমি কোন পলিটিক্যাল প্রোগ্রামে যাচ্ছি না ফেনীতেও আমাদের পার্টির একটি জনসভা জরুরী হয়ে পড়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমি বলেছি তিনি সুবিধামতো সময় একটি ফেনীতে একটি বড় সমাবেশ করবেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী–২ আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীন মোহাম্মদ, ফেনী পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, জেলা যুবলীগ সভাপতি ও দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিদারুল কবির রতন, সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিবেদিতা চাকমা, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মাস্টার কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন মামুন, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মেহরাজ শাবরিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিন মুন্সী, উপজেলা যুবলীগ সভাপতি আবুল ফোরকান বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন।
এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মামুন/ আল / দীপ্ত সংবাদ