বাংলাদেশে প্রতিরোধযোগ্য অন্ধত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে শুরু হয়েছে বৃহৎ পরিসরের ছানি অপারেশন কার্যক্রম। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অরবিস ইন্টারন্যাশনাল ও পল্লী কর্মসংস্থান ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর অংশীদারিত্বে বাস্তবায়িত এ উদ্যোগের আওতায় আগামী দুই বছরে এক লাখ ছানি অপারেশন সম্পন্ন করা হবে।
বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিকেএসএফ ভবনের মিলনায়তনে “কমপ্রিহেনসিভ ক্যাটারাক্ট সার্ভিসেস ইন বাংলাদেশ” প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর এবং অরবিস ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক ক্রিস্টি হাবার্ড। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পিকেএসএফ–এর উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসান খালেদ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফ–এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলুল কাদের। প্রকল্পের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন অরবিস ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মুনীর আহমেদ। তিনি জানান, বর্তমানে দেশে ৩০ বছরের বেশি বয়সী প্রায় সাড়ে ৫ লাখ মানুষ দৃষ্টিহীন, যার প্রায় ৭০ শতাংশই ছানিজনিত কারণে অন্ধ। এদের বড় অংশ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় জাতীয় উৎপাদনশীলতার ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
প্রকল্পের আওতায় পিকেএসএফ–এর সহযোগী সংগঠনের সহায়তায় ৫,০০০ আউটরিচ প্রোগ্রামের মাধ্যমে এক মিলিয়ন রোগীর স্ক্রিনিং করা হবে। পাশাপাশি চক্ষু হাসপাতালগুলোর মাধ্যমে ১,২০০–এর বেশি স্বাস্থ্যকর্মীকে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। দেশের ৫০টি জেলায় সরকার পরিচালিত ২০০টি কমিউনিটি আই সেন্টার এবং ১০০টিরও বেশি বেসরকারি ভিশন সেন্টারকে প্রাথমিক রেফারেল ও ফলো–আপ পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এছাড়া ২৫টি বেসরকারি হাসপাতাল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর রোগীদের সার্জারি সেবা প্রদান করবে।
অরবিস ইন্টারন্যাশনাল ১৯৮৫ সাল থেকে বাংলাদেশে অন্ধত্ব প্রতিরোধ ও চক্ষু সেবার উন্নয়নে কাজ করছে। উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতাল ও হাসপাতালভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের দীর্ঘমেয়াদি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
অনুষ্ঠানে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, অংশীদারিত্বের স্মারক বিনিময় এবং প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে কার্যক্রমের সূচনা হয়।