অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাজারে এমনভাবে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে যে, ট্যাক্স কমিয়েও নিত্যপণ্যের দাম কমানো যাচ্ছে না।
বুধবার (নভেম্বর ১৩) পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) আয়োজিত ‘পিকেএসএফ দিবস ২০২৪’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মানুষ বলছে পণ্যের দাম কমছে না, অথচ এনবিআর অনেক সুবিধা দিয়েছে। ট্যাক্স কমিয়ে দিলাম তারপরও নিত্যপণ্যের দাম কমে না। মানুষ অধৈর্য হয়ে গেছে, এটাই স্বাভাবিক। আমি প্রধান উপদেষ্টাকে বললাম, বাজারে দাম কমানো শুধু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ না। এখানে অনেকগুলো ফ্যাক্ট আছে। বাজারে গিয়ে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। ৫০০ টাকা নিয়ে গেল দু–মুঠো শাক ও অন্যান্য কিছু কিনলেই টাকা শেষ হলো। আমি চেষ্টা করছি বাজারে পণ্যের দাম কমানোর জন্য।
তিনি বলেন, আমরা চলে গেলেও মানুষ মনে রাখবে। কারণ আমরা ভালো কাজ করেছি। মানুষ বলবে স্যার আপনি ওখানে ছিলেন আপনি অমুক কাজ করছেন। অনেকে আমাদের ধন্যবাদ দেয় যে, স্যার আপনি ট্যাক্সের অমুক কাজটি ভালো করেছেন। বন্ডের ট্যাক্স তুলে দেওয়ায় মানুষ আমাদের অনেক ভালো বলে। সঞ্চয়পত্রেও আমরা ভালো করেছি। এখন সঞ্চয়পত্রে স্বয়ংক্রিয়ভাবে রিনিউ হচ্ছে। ভালো জিনিস যত তাড়াতাড়ি করা যায় ততোই মঙ্গল।
আক্ষেপ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ভালো প্রতিষ্ঠানের বড্ড অভাব। বিল্ডিং আছে কিন্তু মানুষ নেই, সেখানে স্বচ্ছতার অভাব জবাবদিহিতার অভাব। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলি যে, তুমি এটা দেখ।
ভারতে ইলিশ রপ্তানিকে ইতিবাচক ব্যাখ্যা করে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার ছোট ভাই ফোন দিয়ে বলে ভাই ইলিশ মাছ দিয়ে দিলেন ফেসবুকে আপনাকে গালি দিয়ে ভরে দিচ্ছে। আমার কিন্তু ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নাই। একটা সিজনে ৫ লাখ ৩০ হাজার টন ইলিশ উৎপাদন হয় ভারতে দিলাম মাত্র ৩ হাজার টন। অনেকে বলছে ভারতে ইলিশ দেওয়া ভালো সিদ্ধান্ত।’
সারা বিশ্বে আমাদের বিষয়ে সবাই ইতিবাচক মন্তব্য করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দিকে কেউ মুখ বাঁকা করছে না। বিশ্বব্যাংক–আইএমএফ সভায় গেলাম, ৭ থেকে ৮ দিন ছিলাম, সবাই আমাদের বিষয়ে ইতিবাচক। সভা করতে করতে আমরা হয়রান হয়ে গেছি। সবাই আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চায়। তবে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কিছু শর্ত থাকে, তবে শর্ত কঠিন নয়। প্রত্যেকে হাত বাড়িয়েছে।
দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সার্বিকভাবে বাংলাদেশের সম্ভাবনা আছে। দেশের কৃষক মজুর ও পোশাক শ্রমিকের অবদানের কারণে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা মানুষের সঙ্গে মিলে মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবো। আমরা দায়িত্ব পালন করছি। আমরা শর্ট টার্ম সংস্কার করবো লং টার্ম সংস্কার করবো না। লং টার্ম সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার। আমরা চাইলেই সব কিছু পারি না, আমাদেরও কিছু বাধা আছে।
আল/ দীপ্ত