নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলায় নিখোঁজের দুই দিন পর ডোবা থেকে মিশুক চালকের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার মামলার প্রধান আসামী রাকিব (২৪) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন ও আলামত উদ্ধার করেছে র্যাব।
রবিবার (১৭ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব ১১ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল তানভীর মাহমুদ পাশা। গ্রেপ্তারকৃ রাকিব বাগেরহাটের কচুয়া বারদাড়িয়া এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলী শেখের ছেলে।
এর আগে শনিবার ( ১৬ মার্চ) ফতুল্লার পাগলা রেলস্টেশন এলাকা থেকে মামলার অন্যতম প্রধান রকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব ১১ এর অধিনায়ক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ১৪ মার্চ ফতুল্লা মডেল থানাধীন পিলকুনি বড় কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠের পাশে ডোবার ভিতরে স্থানীয় লোকজন শরীরে আংশিক পচন ধরা অর্ধগলিত অবস্থায় একটি মৃত দেহ দেখতে পায় এবং ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশকে অবগত করে। পরবর্তীতে পুলিশ এলাকার লোকজনের সহায়তায় ডোবা হতে মরদেহ উদ্ধার করে এবং লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ভিকটিমের মা মরদেহের চেহারা এবং পরিহিত পোশাক দেখে চাঁদপুরের হাইমচরের কান্দি ইসানবালার মৃত মোক্তার হোসেনের ছেলে মো. রাজু খান (১৯) বলে শনাক্ত করে। ভিকটিমের পরিচয় সনাক্ত হওয়ায় পর তার মা বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ ফতুল্লা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আসামি রাকিব এবং উক্ত মামলার অপর আসামি মো. পারভেজ (২৩) দুইজনই ফতুল্লা থানাধীন মাসদাইর এলাকায় এ্যাডিশন অব ফ্যাশন, চৌধুরী কমপ্লেক্স মাসদাইর গার্মেন্টস কোম্পানীতে চাকুরি করত। গত ১২ মার্চ কোম্পানীতে চুরির দায়ে তাদেরকে কোন প্রকার বেতন–ভাতা না দিয়ে কোম্পানী হতে বহিস্কার করা হয়। পরবর্তীতে তারা পরিকল্পনা করে তাদের একই এলাকার পরিচিত মিশুর চালক ভিকটিম মো. রাজু খানকে (১৯) ফতুল্লা থানাধীন পাগলা এলাকায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভাড়া ঠিক করে। তারা মিশুকে চড়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন পাগলা এলাকার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে সময় ক্ষেপন করে এবং নির্জন স্থান খোঁজ করতে থাকে। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ১২ টায় পিলকুনি বড় কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠের পাশে নিয়ে গিয়ে অন্যতম প্রধান আসামি মোঃ বুলবুল শেখ শ্বাসরোধ করে হত্যার উদ্দেশ্যে তার পরিহিত প্যান্টের বেল্ট খুলে অপর আসামি পারভেজসহ ভিকটিমের গলায় পেচিয়ে ভিকটিমকে মাটিতে ফেলে দেয়।
তিনি আরো জানান, পরবর্তীতে পারভেজ ভিকটিমের গলায় পা দিয়ে চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করে।মৃত্যু নিশ্চিত হলে দুইজনই মিলে ভিকটিমকে পাশের ডোবাতে ফেলে দেয় এবং তারা ভিকটিমের ভাড়াকৃত মিশুক গাড়িটি চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে অন্যত্র নিয়ে গিয়ে গাড়ির রং পরিবর্তন করে নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব শাহী মহল্লা এলাকায় একটি পুরাতন অটোরিক্সা ক্রয়–বিক্রয়ের দোকানে (সাইফুল সাইকেল হাউজ) আসামি মো. সানাউল্লাহের নিকট ২৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে। বিক্রিত টাকা রাকিব এবং পারভেজ নিজেদের ভিতর ভাগাভাগি করে নেয়।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায় যে, আসামি মোঃ সানাউল্লাহ চোরাই অটো ক্রয়–বিক্রয়ের চক্রের সাথে সংশ্লিষ্ট এবং সে চোরাই অটো ক্রয় করে রং পরিবর্তন করার পর বিভিন্ন অংশে ভেঙ্গে বিক্রয় করে থাকে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
গৌতম / সুপ্তি / দীপ্ত সংবাদ