নাটোর চিনিকলে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গভীর রাতে বৃষ্টির মধ্যেই ডাকাত দলের সদস্যরা চিনিকলের নিরাপত্তা রক্ষীদের বেঁধে রেখে কারখানার গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান যন্ত্রাংশ লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ৮ নিরাপত্তা কর্মীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে ২ জনকে। আর ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রবিবার (০৩ আগস্ট) রাতে নাটোরে বজ্রপাতসহ বৃষ্টিপাত হয়। এর মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জন ডাকাত ট্রাক নিয়ে নাটোর চিনিকলে প্রবেশ করে। এ সময় ১২ জন নিরাপত্তা প্রহরীকে কারখানার বয়লার সেকশনের একটি রুমে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়।
একাধিক নিরাপত্তা রক্ষীরা জানায়, ডাকাত দল মিলের ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন আলমারি ভাংচুর করে। এসময় পিতলের ওয়েল্ডিং ক্যাবল, ৩০০ কেজি ব্রাশ শ্যাফট, পাম্প ইম্পেলার, পাম্প ইনার প্লেট, ফিটিং বুশ, সিরাম পাম্প, পাম্প স্টার ও রোটার, স্ক্রিন্ড জুস পাম্পসহ প্রায় কোটি টাকা মূল্যের কারখানার বিভিন্ন দামী যন্ত্রাংশ লুট করে নিয়ে যায়। ভোর সাড়ে ৪টার দিকে নিরাপত্তা প্রহরীদের আরেকটি দল কারখানায় এসে জিম্মি প্রহরীদের উদ্ধার করে।
নাটোর চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক প্রশাসন আনোয়ার হোসেন জানান, পুলিশসহ মিলের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মিলটি পরিদর্শন করে। এ ঘটনায় কৃষি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ফেরদৌসুল আলমকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করে মিল কর্তৃপক্ষ। আর দায়িত্বে অবহেলার জন্য নিরাপত্তা হাবিলদার বদরুদ্দীন বেগ ও নিরাপত্তা প্রহরী সাব্বির আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমডি আখলাছুর রহমান জানান, ডাকাতির ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এর কারণে আগামী মৌসুমে আখ মাড়াই কার্যক্রমের কোন সমস্যা হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় মিল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ জন নিরাপত্তা কর্মীকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে বলে জানান পুলিশের কর্মকর্তারা।
নাটোর চিনিকলে ডাকাতির ঘটনায় ৯০ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার মালামাল লুটের কথা দাবি করেছে মিল কর্তৃপক্ষ।
সাহেদুল/আল