ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির রেলস্টেশনে পদদলিত হয়ে নারী ও শিশুসহ অন্তত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। স্থানীয় সময় শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত মহাকুম্ভ মেলায় যোগ দিতে আসা তীর্থযাত্রীদের অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
দেশটির একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাকুম্ভগামী বিশেষ ট্রেন আসতে দেরি হওয়ায় স্টেশনে অপেক্ষারত হাজার হাজার তীর্থযাত্রীর মধ্যে হুড়োহুড়ি শুরু হয়। এর মধ্যেই ১৪ এবং ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগমে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় এবং পদদলিত হয়ে ঘটনাস্থলেই ১৫ জনের মৃত্যু হয়। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পর আরও তিনজন মারা যান। নিহতদের মধ্যে চারজন শিশু ও ১১ জন নারী ছিলেন।
দুর্ঘটনার পর দ্রুত উদ্ধারকাজ শুরু করে জরুরি নিরাপত্তা বাহিনী। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রেলওয়ে পুলিশ (আরপিএফ) ও দিল্লি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক শোকবার্তায় তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
দেশটির কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, রেলস্টেশনের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং অতিরিক্ত ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে ভিড় দ্রুত কমে আসে।
একই দিনে সকালে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ–মির্জাপুর মহাসড়কের মেজা এলাকায় কুম্ভমেলায় যোগ দিতে আসা তীর্থযাত্রীদের বহনকারী একটি বাস দুর্ঘটনায় পড়ে, যেখানে ১০ জন নিহত ও ১৯ জন আহত হন। এর আগে ২৯ জানুয়ারিও মহাকুম্ভে পদদলিত হয়ে ৩০ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন এবং ৬০ জন আহত হন।
গত ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মহাকুম্ভ মেলায় লাখো তীর্থযাত্রী অংশ নিচ্ছেন, যা আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এত বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগমের ফলে নিরাপত্তা ও যাতায়াত ব্যবস্থাপনা নিয়ে চরম চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে প্রশাসন।