বন্যার পানি কমে যাওয়ার সাথে সাথে গাইবান্ধার বিভিন্ন স্থানে তিস্তা, যমুনা ও ব্রক্ষ্মপুত্র নদের তীব্র ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ভাঙ্গন আতংকে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নদী পাড়ের হাজার হাজার মানুষ।
গত সপ্তাহে নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে দুই শতাধিক বসতবাড়ি ও আবাদি কৃষি জমি। হুমকির মুখে পড়েছে বহু স্থাপনা। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছেন, চলামান প্রকল্পের বাইরেও বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে, সে সব স্থানে ভাঙ্গনরোধে প্রকল্প প্রস্তত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলেও দ্রুত কাজ করা হবে।
তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদে পানি কমে যাওয়ায় ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে জেলার সদর উপজেলার গিদারী, ধুতিচোড়া, শীলপাড়া, সুন্দরগঞ্জের সিঙ্গাজানী, লালচামার ফুলছড়ির রতনপুর, ভুষিরভিটা, গুণভরি, সাঘাটার মুন্সিরহাটসহ আশেপাশের বেশ কিছু এলাকায়।
গত এক সপ্তাহে এসব এলাকার দুই শতাধিক বতসবাড়ি, প্রায় শত বিঘা চাষযোগ্য আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফুলছড়ির রতনপুর ও সাঘাটার মুন্সিরহাটে পাউবো জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। হুমকির মুখে রয়েছে সরকারি–বেসরকারি বেশ কিছু স্থাপনা।
ভুট্টা ক্ষেত্রসহ দশ বিঘা জমি ব্রহ্মপুত্রের নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার ধুতিচোরা গ্রামের লাল মিয়া (৪০)। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে শতশত বিঘা জমি নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে ধুতিচোরা গ্রামের কয়েকশ ঘরবাড়ী নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
একই গ্রামের সোনা মিয়া জানান, নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে এখানে নদীভাঙ্গন শুরু হয়েছে। বালু খেকোদের কারণে আজ আমরা এ গ্রামের মানুষ নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছি। জরিনা বেওয়া বলেন, যেভাবে ভাঙ্গছে তাতে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই হয়তো ঘরবাড়ি অন্যত্র সরাতে হবে। ভাঙ্গন প্রতিরোধে এখানে কোন কাজ করছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ফুলছড়ির রতনপুর গ্রামের আকমল হোসেন জানান, খালি বসতভিটা, ঘরবাড়ি ভাঙ্গছে না, নদীতে ভেঙ্গে যাচ্ছে জেলার সম্ভাবনাময় শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত ১৬৫টি চরাঞ্চলে তিস্তা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের গর্ভে বিলিন হচ্ছে বিপুল পরিমান আবাদি জমি। তবে চরের ভাঙ্গণ ঠেকানোর জন্য পাউবো‘র এখন পর্যন্ত কোনো পরিকল্পনা নেই।
গাইবান্ধা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, চলমান প্রকল্পের বাইরেও বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। সে সব স্থানে ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রকল্প প্রস্তত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
ভবতোষ রায়/মোরশেদ আলম/দীপ্ত নিউজ