শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪

নওগাঁয় প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে রঙিন ফুলকপি

Avatar photoদীপ্ত নিউজ ডেস্ক

নওগাঁয় পিকেএসএফএর অর্থায়ন ও স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী’র কারিগরি সহযোগিতায় রঙিন (বেগুনী ও হলুদ) ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক জালাল হোসেন।

জেলার সদর উপজেলার হাপানিয়া ইউনিয়নের কসবা গ্রামে বাড়ির পাশে এই কৃষক ১২ শতক জমিতে চাষ করছে রঙিন ফুলকপি। বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করে এলাকায় বেশ সাড়া ফেলেছেন তিনি। প্রতিদিনই হলুদ, বেগুনি রঙের ফুলকপি দেখতে ও কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা। আকারে বড় এবং দামেও বেশি এসব ফুলকপি থেকে লাভবানও হয়েছেন তিনি।

কৃষক জালাল হোসেন বলেন, গত বছর নওগাঁর স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা “মৌসূমী” থেকে কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণে ভিডিও ফুটেজে রঙিন ফুলকপি চাষ দেখে সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এনজিওটির কারিগরি সহযোগীতায় জেলার মধ্যে প্রথমবারের মতো ১হাজার চারা এনে জমিতে রোপণ করেন তিনি।

জালাল হোসেন বলেন, ‘আমি যখন জমিতে ফুলকপি চাষ করি; তখন অনেকেই বলছিলেন এই ফুলকপি এই এলাকায় ভালো হবেনা। খেতে যদি খারাপ লাগে তখন কে নেবে?  তাদের কথায় ভেঙে পড়িনি। আমার মনে জোর ছিল যে বাজারে বিক্রি করতে পারবো। সেই আশায় চাষ করে বেশ সাড়া পেয়েছি এবং আর্থিকভাবেও সফল হয়েছি। ১২ শতক জমিতে দুই রকমের ফুলকপি চাষ করেছি। খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। প্রতি পিচ কপি ৪০৫০টাকা দামে বিক্রি করছি। এখন পর্যন্ত ২০ হাজার টাকার মতো কপি বিক্রি করেছি।’

তিনি বলেন, ‘জমিতে যে পরিমাণ ফুলকপি আছে, তা বর্তমান বাজার দরে আরও ২৫হাজার টাকা বিক্রি করা যাবে। ৮হাজার টাকা খরচ করে ৪৫হাজার টাকার রঙিন ফুলকপি বিক্রি করতে পারবো। আমার জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ দেখে এলাকার কৃষকরা বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আগামী বছর অনেকেই বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাহারি রঙের ফুলকপি চীনে খাওয়া হয় সালাদ হিসেবে। সাদা ফুলকপির চেয়ে রঙিন ফুলকপির পুষ্টিগুণ বেশি। বাজারেও চাহিদা বেশি। দেখতে সুন্দর এ কপি অর্ধসিদ্ধ করেই খাওয়া যায়। কম খরচ ও কম পরিশ্রমে চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের বদলে ব্যবহার করা হয়েছে জৈব সার ও ফেরোমন ফাঁদ। চারা রোপণের ৭০৮০ দিনের মধ্যেই কপি বিক্রি করা যায়। একেকটি কপির ওজন হয় প্রায় দুই কেজি।

কসবা গ্রামে রঙিন ফুলকপি দেখতে ও কিনতে আসেন একই গ্রামের মোখলেছুর, আসাদুজ্জামান, সেলিনা এবং মোরশেদা। তারা বলেন, ‘প্রথমবার এমন বাহারি রঙের ফুলকপি দেখলাম। জালাল ভাইয়ের কাছ থেকে হলুদ ও বেগুনি রংয়ের ফুলকপি কিনলাম। বাহারি রঙের ফুলকপি দেখতেও বেশ ভালো লাগছে।’

রও পড়ুন: ফুল নয় ফুলকপি!

মৌসুমী‘র কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান আরিফ বলেন, উচ্চ ফলনশীল ও উচ্চমূল্যের নতুন ফসলজাত প্রচলন প্রদর্শনীর আওতায় ‘হলুদ রঙের ভ্যালেন্টিনা এবং বেগুনি রঙের ক্যারেটিনা জাতের এ ফুলকপি পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী হয়েছে। সফলতা আসায় আগামীতে এ অঞ্চলে সবজিটি ব্যাপকভাবে চাষাবাদ করানো হবে। কৃষক জালাল হোসেনের মাধ্যমে এ বাহারি ফুলকপির আবাদ করানো হয়। নওগাঁয় এটাই প্রথম রঙিন জাতের ফুলকপি চাষ।’

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জানা মতে নওগাঁয় প্রথমবার জালাল হোসেন বাহারি রঙের ফুলকপি চাষ করে সফল হয়েছেন। এলাকার অন্য কৃষকদের মাঝে বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে। রঙিন ফুলকপিতে ভিটামিন এ, সি, কে, ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, এন্টিঅক্সিডেন্টসহ মানবদেহে উপকারী বিভিন্ন উপাদান আছে। সাধারণ ফুলকপি যেখানে ২০৩০ টাকায় বিক্রি হয়; সেখানে এটি বিক্রি হচ্ছে ৫০৬০ টাকায়। আশা করা যাচ্ছে, আগামীতে রঙিন ফুলকপি চাষ অনেকটাই বাড়বে।’

রিপন / আল/ দীপ্ত সংবাদ

আরও পড়ুন

সম্পাদক: এস এম আকাশ

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন

স্বত্ব © ২০২৩ কাজী মিডিয়া লিমিটেড

Designed and Developed by Nusratech Pte Ltd.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More